এই লেখাটির সাথে অনেকেই হয়তো পরিচিত “The number of ads you can show has been limited” যদি আপনার প্রশ্নটিই হয়ে থাকে গুগল অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট আসে কেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবে। দেখা যায় সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও হঠাৎ করে গুগোল এমন একটি মেইল পাঠানো যা দেখে চমকে যাওয়ার মতন অবস্থা হল।
আজকে আমি চেষ্টা করব কি কি কারণে অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট হয়, এর সমাধান কি এসকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার। অনেকেরই ধারণা গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ পাওয়া মানেই অনেক টাকা উপার্জন করার একটা নতুন মাধ্যম তৈরি হওয়া, কিন্তু এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। মূলত এখানে আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক যত বৃদ্ধি পাবে, সেই অনুসারে আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পাবে।
কিছু সংখ্যক হুজুগে বাঙালি এই বিষয়টি মানতে নারাজ। তারা চাচ্ছেন রাতারাতি অ্যাডসেন্স থেকে কয়েক হাজার ডলার উপার্জন করতে, যা সম্পূর্ণটা কেবলমাত্র স্বপ্ন। একটা সময় এসে এরা নিজেদের ওয়েবসাইটে ইনকামের লক্ষ্যে এমন কিছু করেন যা সম্পূর্ণ গুগোল অপছন্দ। অথবা গুগোল এই বিষয়গুলো ভালোভাবে না নিয়ে অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট করে দেয়।
►► আরো দেখুন: গুগল এডসেন্স কি?
►► আরো দেখুন: গুগল এডসেন্স এপ্রুভ ট্রিক্সস ২০২৩
গুগল অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট কি?
যাদের মাল্টিপল গুগল অ্যাডসেন্স একাউন্ট রয়েছে তারা অবশ্যই গুগলের এই সিকিউর এড নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অবগত। প্রাথমিকভাবে একটা ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে সবাই গুগল অ্যাডসেন্স কে সিলেক্ট করে থাকে। কেননা, এটি সর্বোচ্চ সিকিউরিটির মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রধান করে থাকে, এবং আপনার রিভিনিউ সঠিকভাবে প্রদান করে থাকেন।
আপনার কাঙ্খিত ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রভাল পাওয়ার পরে নিয়ম অনুযায়ী অর্থ বিজ্ঞাপন চালু করে দিলে আপনার ওয়েবসাইটে কিছুক্ষণ পরে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়ে থাকে।বিশেষ কিছু কারণে কিছু সময়ের জন্য গুগল এই বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই সময়টিতে ওয়েবসাইটে আগের তুলনায় কম বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। এটাকেই মূলত অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট বলা হয়।
অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট হলে সমস্যা কি?
যদি আপনার ওয়েবসাইটটি গুগল অ্যাডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ হয়ে থাকে আর যদি এডমিট হয়ে থাকে তাহলে আপনি লক্ষ্য করলে অ্যাডসেন্স একাউন্টের হোমপেইজে উপরের দিকে একটি নতুন নোটিফিকেশন চলে আসবে। যেখানে লেখা থাকবে “The number of ads you can show has been limited. For details, go to the Policy center.”
অর্থাৎ, পূর্বের থেকে আপনার ওয়েবসাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আর বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেয়ার মানেই হচ্ছে আপনার উপার্জন পূর্বের থেকে অনেকগুণ কমে যাওয়া এবং আপনি যদি একই ভুল আবারও করেন সেক্ষেত্রে পুরোপুরি ভূগোলের বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।
আপনি যদি রেগুলার আপনার ওয়েবসাইটে আর্টিকেল প্রকাশ করেন অথবা আপডেট রাখেন সে ক্ষেত্রে কিছুদিন পরে অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট অটোমেটিক উঠে যাবে এবং পূর্বের মতো আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। সতর্কতাঃ আপনার গুগল অ্যাডসেন্স একাউন্টে বারবার অ্যাড লিমিট আসার ফলে হয়তো এটি ডিজেবল হয়ে যেতে পারে।
অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট কেন হয়?
Know your ad traffic sources and site visitors |
Never click on your own ads |
Avoid partnering with parties you don’t trust |
Learn more about limited ad serving |
মূলত, অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট বলেই আমরা সাধারণত ভেঙে পরি অথবা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটের নিয়মিত কাজগুলো বন্ধ করে দেই তবে আপনি কি কখনো দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তা করেছেন, কেন গুগল আপনার এঅ্যাডসেেন্স এ্যাড লিমিট দেয়? গুগোল হচ্ছে একটি পপুলার এবং জার্মান কোম্পানি, মূলত তাদের নাম এবং মানসম্মত সার্ভিস প্রদানের বিষয়টি লক্ষ্য রেখে তারা যে সার্ভিস প্রদান করছে সে বিষয়টি আপনাকে জানাতে চাচ্ছি এবং তাদের রুলস যেন আপনি অমান্য না করেন সে বিষয়টি আপনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।
গুগোল বিজ্ঞাপনদাতা এবং ওয়েবসাইট এর মালিকের সাথে ভালো একটি সম্পর্ক তৈরির জন্যই তারা এডলিমিটের মত একটি নোটিফিকেশন আপনাকে পাঠাচ্ছে। এর ফলে একজন বিজ্ঞাপনদাতা যেমন ফ্রড বা প্রতারকের হাত থেকে বাঁচে একইভাবে ইউজাররাও ভালো এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করতে পারে। তবে বিভিন্ন কারণের জন্য আপনার অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট হতে পারে। কারণ গুলো কি চলুন জেনে আসি।
এ্যাড লিমিট হওয়ার কারণ
১. ইনভ্যালিড ট্রাফিক: আপনি যদি অবৈধ কোন মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসার চেষ্টা করেন এটা গুগলের কাছে ইনভ্যালিড ট্রাফিক সোর্স। তবে ইনভ্যালিড ট্রাফিকের কাঙ্ক্ষিত কোনো সংজ্ঞা থাকেনা। ফেইক কিংবা বট ট্রাফিক ইনভ্যালিড ট্রাফিক সোর্সের অন্যতম।
বেশি ইনকাম করার লক্ষ্যে আপনি কারো থেকে যদি ট্রাফিক ক্রয় করেন অথবা আদান প্রদান করে থাকেন এটি গুগলের চোখে ইনভ্যালিড সোর্স। আপনার ওয়েবসাইটে একজন ট্রাফিক এসে মিনিমাম কিছু সময় না থেকে বের হয়ে যাওয়া এটাও গুগলের পছন্দ নয় অথবা একই সময়ে একই ব্যক্তি বারবার বিভিন্ন পেইজ ভিজিট করলে এটাও গুগলের অপছন্দ।
২. ইনভালিড ক্লিক: অতিরিক্ত ইনকাম করার লক্ষ্যে আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে নিজেই ক্লিক করে থাকেন তাহলে এটি খুবই ভয়ঙ্কর, হতে পারে এই কারণের জন্য আপনার অ্যাডসেন্স চিরতরে হারাতে। অন্য কাউকে ক্লিক করার জন্য আগ্রহ করা অথবা একই ডিভাইস থেকে বার বার আপনার বিজ্ঞাপনগুলোতে কিলিক পড়া এটি আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টের জন্য ক্ষতিকর দিক।
►► আরো দেখুন: বিকাশ লোন নেওয়ার উপায়
►► আরো দেখুন: ওয়েবসাইট অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রভাল চেকার
অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট হলে করণীয় কি?
মনে রাখবেন আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টে এ্যাড লিমিট হওয়া মানেই যে আপনার অ্যাডসেন্স কি বাতিল হয়ে যাবে অথবা গিয়েছে তা কিন্তু নয়। এটি কেবলমাত্র গুগল থেকে পাওয়া একটি সতর্কতা বার্তা। উপরে উল্লেখিত যে কারণগুলো রয়েছে যার জন্য অ্যাড লিমিট হয়ে থাকে সেই কারণগুলো নতুন করে না করলে আপনার ওয়েবসাইটে পুনরায় আবারও বিজ্ঞাপন দেখানো হবে।
অ্যাড লিমিট অটোমেটিক চলে যাবে, যদিও এখানে আপনার কোন হাত নেই তবে আপনি যদি এটা ম্যানুয়াল ভাবে অ্যাড লিমিট উঠানোর চেষ্টা করেন সে ক্ষেত্রে আপনার অ্যাডসেন্স ডিজেবল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে। গুগল যখন খেয়াল করবে যে আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত অর্গানিক ট্রাফিক আসছে এবং পূর্বের ন্যায় আপনি কোন ভুল করছেন না তখন দেখবেন আবার নতুন করে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে।
শেষ কথা
আসলে গুগলকে ফাঁকি দিয়ে আপনি কখনোই আপনার ওয়েবসাইট কে নিয়ে বেশিদূর আগাতে পারবেন না। আজ হোক অথবা কাল গুগোল আপনার এই ফাঁকে ধরেই ফেলবে, তখন হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। গুগোল মূলত রোবটিক্স দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে তবে রোবটিক্স সিস্টেমগুলো ফাঁকি দেওয়া অনেক বেশি কষ্ট সাধ্য।
গুগল অ্যাডসেন্স এ্যাড লিমিট হলে না ঘাবড়িয়ে আপনি পূর্বের মত আপনার ওয়েবসাইট এ রেগুলার আর্টিকেল প্রকাশ করেন। অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়ার সিস্টেম করেন, দেখবেন গুগোল আপনার ওয়েবসাইটের নতুন করে আবার বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করেছে এবং পূর্বের মত আপনার আর্নিং হচ্ছে। সর্বোপরি অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম পেতে হলে গুগলের নিয়ম অনুসরণ করুন।
►► আরো দেখুন: অনলাইনে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়
►► আরো দেখুন: লেখালেখি করে আয় করার ওয়েবসাইট ২০২৩