আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। প্রিয় দর্শক, আজ আমরা ২০টি দুর্বল ঈমানের লক্ষণ জানবো। যেগুলো জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দুর্বল ঈমান প্রত্যেকটা মুমিন-মুসলমানদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে এটি আপনার জাহান্নামের কারণ। দুর্বল ঈমানের লক্ষণ গুলো আপনার মধ্যে বিরাজমান আছে কিনা আজকেই জানুন।
নিচে ২০টি দুর্বল ঈমান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যদি এর মধ্যে কোনটি আপনার মধ্যে বিরাজমান থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার ঈমান প্রচুর দুর্বল।
ঈমান শক্তিশালী মজবুত এবং সতেজ করতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন যাপন করুন।
[ads1]
দুর্বল ঈমানের লক্ষণ গুলো
১! পাপ করা সত্ত্বেও মনে পাপ বোধের সৃষ্টি না হওয়া। দুর্বল ঈমানের ব্যক্তি বর্গ গন প্রচুর পাপ করার পরেও নিজের কাছে মনে হয় না যে তিনি পাপী।
তিনি যে পাপী সেটা মুহূর্তের জন্য তিনি মনে করতে পারেন না। আনন্দ উল্লাস এর মধ্যে নিজেকে সবসময় বিরাজমান রাখেন।
২! কুরআন তেলাওয়াতের ব্যাপারে অনীহা এবং অর আগ্রহ অনুভব করা। যাদের ঈমান দুর্বল তারা কোরআন তেলাওয়াত করতে চাইবে না, এটি তাদের ভালো লাগছে না।
তাদের মনে হবে কোরআন তেলোয়াত ভালো লাগেনা। মূলত তাদের ঈমান দুর্বল সেটা তারা বুঝতেই পারবে না।
[ads1]
৩! ভালো কাজে আলসেমি মত হওয়া বা ঢিলেমি করা।
যেমন : নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় না করা। সর্বোত্তম পাপী তিনি, প্রত্যেকটা কাজে নিজেকে অলস পরিচয় দেয়া এবং প্রত্যেকটা কাজ খুব আস্তে আস্তে করা যাতে করে নিজের শরীরে কোন কষ্ট অনুভব না হয় এটা ঈমান দুর্বল হওয়ার পরও লক্ষণ। এছাড়াও নিজের লক্ষণীয় কাজগুলো সময়মতো না করা।
৪! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর সুন্নাহ অনুসরণের ব্যাপারে অবহেলা করা। পাপী এবং দুর্বল ঈমানের ব্যক্তিগণ মনে করে থাকেন, সুন্নত না করলেও আমি জান্নাতে যেতে পারবো।
অথবা আমার অনেক নেকি আছে যার জন্য সুন্নত প্রয়োজন নেই। দুর্বল ঈমানের এই ব্যক্তি জানে না যে সুন্নত এর তাৎপর্য কত গুরুত্বপূর্ণ, কত অপরিসীম।
৫! খামখেয়ালি মেজাজ, যেমন – সামান্য বিষয় নিয়ে তুলকালাম করে ফেলা অথবা মেজাজ সবসময় খিটখিটে হয়ে থাকা।
পাড়া-প্রতিবেশী ফ্যামিলির সবার সাথে খারাপ বিহেভ করা। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সবার সাথে গরম হয়ে কথা বলা। সবার সাথে রাগী কন্ঠে কথা বলা হচ্ছে দুর্বল ঈমানের পরিচয়।
[ads1]
►► আরো পড়ুন: কিভাবে কাউকে ইংরেজিতে পরিচয় করিয়ে দিব?
►► আরো পড়ুন: দুনিয়াতে জাহান্নামী ও জান্নাতি লোক চেনার উপায়
দুর্বল ঈমানের মানুষদের অবস্থান
৬! কুরআনের তেলাওয়াত শোনার পরেও হৃদয়ের মধ্যে কোন রকমের প্রভাব বা অনুভূতি তৈরি না হওয়া দুর্বল ঈমানের আরেক কারণ।
আমরা জানি কোরআন হচ্ছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব এবং কুরআনের তেলাওয়াত হচ্ছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কন্ঠ কিন্তু এটি শুনেও যাদের মধ্যে কোন ধরনের অনুভুতি আসে না তারা খুবই পাপী এমনকি তাদের ঈমান খুব বেশি দুর্বল।
যেমন- কুরআনে জাহান্নামের কথা বলা হয়েছে, পাপের শাস্তির কথা বলা হয়েছে, সৎকাজের জন্য পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে উসকা। এসব শোনার পরেও যে সকল ব্যক্তির অন্তরে একটু অনুভুতির সৃষ্টি হয় না বুঝতে হবে তার ঈমান অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে।
[ads1]
৭! মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের স্মরণ থেকে বিমুখ হওয়া, এবং তাকে সামনে রাখাটা কঠিন মনে হওয়া।
অনেক দেখবেন বলে থাকে, আল্লাহকে স্মরণ করাটা কঠিন হয়ে গেছে আজকাল।
প্রিয় দর্শক, এ জাতীয় কথা কখনো কান দিবেন না। আল্লাহর স্মরণ থেকে শ্রেষ্ঠ কোন কাজ আর কিছুই হতে পারে না।
৮! শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার পরেও মনে কোনো অনুশোচনা অনুতাপ না হওয়া।
যেমন- মানুষ অনেক ভয়ঙ্কর কবিরা গুনাহ, অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেও তার অন্তরে একটুও অনুভূতি তৈরি হচ্ছে না।
ঈমান দুর্বল থাকায় তার অন্তরে একটুও গুনাবতি তৈরি হচ্ছে না। অনুশোচনা অনুতাপ তৈরি হচ্ছে না।
এ লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে তার ঈমান দুর্বল হয়ে পড়েছে।
৯! সামাজিক অবস্থান ধন-সম্পদ প্রভাব-প্রতিপত্তি সামাজিক অবস্থান এসব কিছুর পিছনে সারাক্ষণ ছুটে চলা।
আল্লাহকে স্মরণে না রাখা শুধু দুনিয়াবী কাজের নিজেকে লিপ্ত রাখা ব্যক্তির ঈমান দুর্বল বুঝতে হবে।
কেবলমাত্র নিজের ব্যবসা ফ্যামিলি টাকাপয়সা উপার্জনের চিন্তাধারার মধ্যে ডুবে থাকলে বুঝতে হবে তার ঈমানের হার কমে এসেছে।
[ads1]
১০! ক্রমাগত মানসিক দৈন্যতা পাশাপাশি আর্থিক কৃপণতা বাড়তে থাকা, ধন সম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা বাড়তে থাকা ব্যক্তির ঈমান দুর্বল হয়ে পড়েছে।
নিজেকে সব সময় টাকা পয়সার মধ্যে ডুবিয়ে রাখা এবং টাকাপয়সা যাকাত না দেওয়া ব্যক্তি ঈমান দুর্বল।
►► আরো দেখো: সফটওয়্যার ছাড়া সেকেন্ডেই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করুন
►► আরো দেখো: eSIM কি? কিভাবে কাজ করে?
নিজে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে অন্যকে সাজেশন করা
[ads1]
১১! নিজে ভালো কাজ না করেও অন্যকে ভাল কাজের আদেশ দেওয়া।
সমাজে এ ধরনের বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন যারা নিজে খারাপ কাজে লিপ্ত থেকেও বিভিন্ন পেশার মানুষকে ভাল কাজের আদেশ করে যাচ্ছেন।
মূলত যারা এধরনের পেশায় যুক্ত তাদের ঈমান দুর্বল হওয়ার লক্ষণ এটি।
১২! অন্যের অবনতি, কষ্ট, ক্ষয়ক্ষতি দেখে মানসিক তৃপ্তি বোধ করা। সমাজে এইধরনের অনেক মানুষ রয়েছেন,
যারা নিকটাত্মীয় বা প্রতিবেশীর ক্ষয়ক্ষতি দেখে মানসিক তৃপ্তি বোধ করে। হে আল্লাহ আপনি রক্ষা করুন আমাদের। এসকল কুৎসিত মন মানসিকতা থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।
১৩! শুধু হারাম হালাল কেই মুখ্য মনে করা। অথচ অপছন্দনীয় ও অনেক নোংরা কাজ আছে যেগুলোর দিকে মনোযোগ না দেওয়া।
[ads1]
১৪! কেউ কোনো ভালো কাজ করলে তা নিয়ে হাসাহাসি করা।
যেমন- কেউ হয়তো মসজিদের খেদমত করল অথবা মসজিদে ঝাড়ু দিলে অথবা কেউ একজন অসহায় ব্যক্তিকে ভারি কোন বোঝা নিয়ে কাঁধে তুলে নিল,
এসব দেখে হাসি তামাশা করা। এটি দুর্বল ঈমানের লক্ষণ
১৫! নিজে একজন মুসলিম হয়েও অন্য মুসলিমের কল্যাণ সাধনের ব্যাপারে কোন প্রচেষ্টা বা মাথাব্যথা না থাকা।
সব সময় নিজের সার্থক জীবন এবং নিজের উপার্জন নিয়ে ব্যস্ত থাকা পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনের বিপদে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া।
দুর্বল ঈমান কারীর ইসলামের প্রতি টান না থাকা
[ads1]
১৬! ইসলামের প্রথম মূল মুসলিমদের কল্যাণ এবং উন্নতি হয় এমন বিষয় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেওয়া।
আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা আল্লাহর রাস্তায় নিজের সময়কে ব্যয় করতে চায় না কোন মসজিদ মাহফিলে নিজে কখনো কষ্ট করতে চায় না নিজের সময়কে আল্লাহর রাস্তায় তথা পক্ষী ব্যয় করা বিরক্তিকর মনে করে।
১৭! বিপদে ধৈর্যধারণ করতে না পারার। যেমন: কেউ মারা গেলে উচ্চস্বরে বিলাপ করে বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করা।
অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি বাজে অভ্যাস।
মানুষ মারা যাওয়ার পরে দেখবেন অনেক মানুষ পাগল হয়ে যায়, নিকটস্থ আত্মীয় স্বজন মারা যাওয়ার ফলে নিজের মধ্যে অনেক বেশি দুর্বলতা চলে আসে মৃত্যুর ভয় চলে আসে।
১৮! কোন দলিল অথবা প্রমাণ ছাড়াই কেবল তর্ক করতে থাকা।
আমাদের সমাজে এমন অনেক মুসলিম আছে আজকাল, যারা বিভিন্ন ফতোয়া নিয়ে,
মাসালা নিয়ে এমনভাবে তর্ক করে যে একপর্যায়ে মারামারি লেগে যায়।
একবার মনে করে না যে ফতোয়ার ব্যাখ্যা মেনে নেওয়ার চেয়েও ভয়ঙ্কর পাপ করছে তারা শুধুমাত্র অতিরিক্ত তর্ক করে।
[ads1]
১৯! দুনিয়ার মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া। দুনিয়ার মোহে অন্ধ হওয়ার একটি লক্ষণ হলো পার্থিব ও কোন কিছুর ক্ষতি হলেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়া।
সমাজে অনেক টাকা পয়সাওয়ালা মানুষ আছেন যাদের কোন কিছু হারিয়ে গেলে ব্যক্তিগতভাবে ভেঙে পড়ে প্রচুর কান্নাকাটি করে।
২০! সব সময় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শুধু বেঁচে থাকা।
চরম আত্মকেন্দ্রিক জীবন যাপন করা মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এইসব কাজ থেকে হেফাজত করুন, এবং আমাদের ঈমানকে মজবুত করে দেন। আমীন।
►► আরো দেখো: ৫ টি ইউটিউবে সফল হওয়ার টিপস
►► আরো দেখো: ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো?
[ads1]
সর্বশেষ কথাগুলো
প্রিয় দর্শক, উপরে যে লক্ষণগুলো বলা হয়েছে সেগুলো যদি আপনার মধ্যে বিরাজমান থাকে তাহলে এখনি ইস্তেগফার করুন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান নিজের ঈমানকে মজবুত করতে প্রতিনিয়ত দান-সাদকা করুন।
এতিমদের খাবার বিলিয়ে দিন। এতিমদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
বন্ধুগণ আমরা যদি আজকে এই দুর্বল ঈমান নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাই তাহলে আমাদের পরবর্তী জীবনটা এত এত কষ্টের হবে যা আমি এখানে লিখে বুঝাতে পারব না।
আমার ঈমান যদি মজবুত না হয় তাহলে হয়তো এর জন্য আমাকে অনেক বেশি শাস্তি পেতে হবে।
[ads1]