বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত?

খুলনা বিভাগের অন্তর্গত বাগেরহাট জেলা জুড়ে সুন্দরবনের বিশাল একটি অংশ বিদ্যমান। যার কারণে বাগেরহাট জেলায় ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনা অনেকটাই বেশি। আজকে আমরা জানতে চলেছি বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত এবং এই প্রসিদ্ধ জেলাটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

বাগেরহাট জেলার ১০টি দর্শনীয় স্থান

  • ষাট গম্বুজ মসজিদ
  • কচিখালি
  • চিলা চার্চ
  • দুবলার চর
  • সুন্দরবন
  • কোদলা মঠ
  • লাউপালা
  • নাট মন্দির
  • মোরেলের স্মৃতিসৌধ
  • কবি রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সমাধি

►► খুলনা জেলা কেন বিখ্যাত?
►► পটুয়াখালী জেলা কেন বিখ্যাত?


বাগেরহাট জেলা

বৃহত্তর খুলনা জেলার একটি মহাকুমা হিসেবে বাগেরহাট পরবর্তীতে একটি পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা পায়। ১৯৮৪ সালে এটিকে জেলা করা হলেও বর্তমানে বাগেরহাট জেলায় আয়তনের দিক দিয়ে একটি বৃহত্তম জেলা। এই জেলার আয়তন প্রায় ৪০০০ বর্গ কিলোমিটার এবং ১৫ লক্ষ মানুষ বসবাস করে থাকে। যদিও এই জেলার মধ্য দিয়েই পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন অবস্থিত। বাগেরহাট জেলায় উপজেলা সংখ্যা নয়টি হলেও পৌরসভা সংখ্যা মাত্র তিনটি। আবার মোট সংসদীয় আসন সংখ্যাও চারটি।

জেলাটির পশ্চিমে খুলনা, পূর্বে পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা এবং উত্তরে গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা। এছাড়া বাগেরহাট জেলার একটি উপকূলীয় জেলা এর দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত এই উপকূলীয় অঞ্চলটিতেই সুন্দরবন অবস্থিত।

বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত?

চিংড়ি উৎপাদনের জন্য বাগেরহাট জেলা দেশজুড়ে বিখ্যাত। বাগেরহাট জেলায় প্রচুর পরিমাণে চিংড়ি উৎপাদন করা হয়। যেখানে সারাদেশে প্রতিবছর চিংড়ির চাহিদা সত্তর হাজার মেট্রিক টন। সেখানে শুধু বাগেরহাট জেলাতেই চিংড়ি উৎপাদন করা হয় তাই ৯০ হাজার মেট্রিক টন। বাগেরহাট জেলা শুধু বাংলাদেশের চিংড়ির চাহিদা পূরণ করছে তাই নয়, এখান থেকে চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চিংড়ি রপ্তানি করে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর শত শত কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করছে। যার কারণে চিংড়ি মাছ বলা হয় সাদা সোনা বা হোয়াইট গোল্ড। বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত প্রশ্নটির সোজাসাপ্টা উত্তর হচ্ছে চিংড়ি মাছের জন্য। এছাড়া বাগেরহাট জেলাতেই চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত।

বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত প্রশ্নটির একটি বিকল্প উত্তর হচ্ছে ষাট গম্বুজ মসজিদ। বাগেরহাট জেলা শহর থেকে দূরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদের নাম ষাট গম্বুজ মসজিদ। এই মসজিদটি কে নির্মাণ করেছেন তার স্পষ্ট কোন প্রমাণ না থাকলেও ধারণা করা হয় খান জাহান আলী এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। এই মসজিদটির নাম ষাট গম্বুজ মসজিদ হলেও মসজিদটিতে মোট গম্বুজ সংখ্যা ৮১ টি। ৭৭ টি সাধারণ গম্বুজ এবং চারটি মিনার গম্বুজ সহ এই মসজিদটি বাংলাদেশের অনন্যতম স্থাপনা। বাগেরহাট জেলাতেই খান জাহান আলীর সমাধিস্থল রয়েছে।

বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান

সুন্দরবন প্রধানত তিনটি জেলার অবস্থিত, যার মধ্যে সাতক্ষীরা ও খুলনার পর বাগেরহাট জেলার নাম আসে। তাই আপনি যদি সুন্দরবন এলাকা ঘুরতে যান সেক্ষেত্রে বাগেরহাট জেলাও একটি দারুণ চয়েস হতে পারে। দুবলার চর ও কটকা সমুদ্র সৈকত বাগেরহাট জেলাতেই অবস্থিত।

সমুদ্র বন্দরের কথা উঠলে আমাদের প্রথমে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের কথাই মাথায় আসে। অথচ বাংলাদেশ সমুদ্র বন্দর সংখ্যা তিনটি। যার মধ্যে পাকিস্তান আমলেই ছিল দুটি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরের নাম মংলা সমুদ্র বন্দর। এই বন্দরটি বাগেরহাট জেলাতেই অবস্থিত। বাগেরহাট জেলা থেকে কিছুটা দূরে বঙ্গোপসাগরের তীরে মংলা বন্দর অবস্থিত। মংলা সমুদ্র বন্দর ১৯৫০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে এবং এটি দিয়ে প্রতিনিয়তই আমদানি রপ্তানি করা হচ্ছে।

এক সময়কার আলোচিত বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা অবশ্যই আপনার মনে আছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলাতেই নির্মাণ করা হয়েছে। এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজে বাংলাদেশের সহায়তা করেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সুন্দরবন হতে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীরে নির্মাণ করা হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।


►► কক্সবাজার জেলা কেন বিখ্যাত?
►► চট্টগ্রাম জেলা কেন বিখ্যাত?


বাগেরহাট জেলা নিয়ে প্রশ্ন উত্তর

১. প্রশ্ন: বাগেরহাট জেলা কেন বিখ্যাত?

উত্তর: চিংড়ি মাছের জন্য

২. প্রশ্ন: চিংড়ি মাছ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের কোন জেলাটি প্রসিদ্ধ?

উত্তর: বাগেরহাট জেলা

৩. প্রশ্ন: কোন পণ্যটিকে সাদা সোনা বা হোয়াইট গোল্ড বলা হয়?

উত্তর: চিংড়িকে

৪. প্রশ্ন: ষাট গম্বুজ মসজিদ কোন জেলায় অবস্থিত?

উত্তর: বাগেরহাট জেলায়

৫. প্রশ্ন: ষাট গম্বুজ মসজিদে গম্বুজ সংখ্যা কয়টি?

উত্তর: ৮১ টি

৬. প্রশ্ন: খান জাহান আলী সমাধিস্থল কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: বাগেরহাট জেলার অবস্থিত

৭. প্রশ্ন: সুন্দরবন কোন তিনটি জেলায় অবস্থিত?

উত্তর: সাতক্ষীরা খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত

৮. প্রশ্ন: চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র কোন জেলায় অবস্থিত?

উত্তর: বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত

৯. প্রশ্ন: মংলা সমুদ্র বন্দর কোন জেলায় অবস্থিত?

উত্তর: বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত

১০. প্রশ্ন: বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর কোনটি?

উত্তর: মংলা সমুদ্র বন্দর

১১. প্রশ্ন: কটকা সমুদ্র সৈকত কোন জেলায় অবস্থিত?

উত্তর: বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত

১২. প্রশ্ন: রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় স্থাপন করা হয়েছে?

উত্তর: বাগেরহাট জেলা স্থাপন করা হয়েছে

অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment

//whairtoa.com/4/6176583