মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় এবং মিথ্যা মামলার শাস্তি

আজকে আমরা আপনাদের শিখাবো মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সমূহ। কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িত না থাকার পরেও যেকেউ আপনার বিরুদ্ধে থানা অথবা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে। কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে থানা অথবা বিজ্ঞ আদালতে মিথ্যা মামলা করে তাহলে প্রাথমিকভাবে আপনি ভয় পাবেন না বা হতাশ হবেন না, কোন দালালের নিকট না গিয়ে একজন বিজ্ঞ আইনজীবির নিকট যাবেন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

তবে মনে রাখবেন, আপনি অপরাধী নাকি নিরপরাধ সেটা মামলার তদন্ত শেষে প্রমানিত হবে এবং যতক্ষন না মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে বাদীর আনীত অভিযোগ প্রমান করতে না পারবে ততক্ষন আপনি নিরপরাধ।


►► অনলাইনে জিডি করার নিয়ম
►► মামলা করার আগে যা জানা দরকার


মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায়

মনে করুন আপনার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এখন হয়রানি থেকে বাচতে হলে আপনাকে মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় জানতে হবে, আপনি নির্দোষ প্রমানিত হবেন কিন্তু তাতে তো মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া অবদি আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে কিন্তু প্রাথমিকভাবে আপনি যেন মামলাটি সঠিকভাবে মোতাবিলা করতে পারেন, আপনাকে সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রথমত আপনাকে একজন আইনজীবির সরনাপন্ন হতে হবে। এরপর বিজ্ঞ আদালতে আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার এজাহারের কপি তুলতে হবে।

মামলার এজাহারের কপি হাতে পাওয়ার পরে দেখতে হবে আপনার বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ আনা হয়েছে উক্ত অভিযোগগুলো জামিনযোগ্য কিনা? যদি আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো জানিযোগ্য হয় তাহলে বিজ্ঞ আদালতে  হাজির হয়ে জামিন চাইতে হবে। যদি আপনার বিরুদ্ধে জামিনের অযোগ্য কোন অভিযোগ আনা হয় তাহলে বিজ্ঞ আদালতে উপযুক্ত কারন দেখিয়ে আগাম জামিন চাইতে হবে।

কখন জামিন চাইতে হবে?

মামলা রুজু হওয়ার পরে যখন মামলার তদন্তকারী অফিসার আপনার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র/সিএস/পুলিশ প্রতিবেন (সবগুলো একই) দাখিল করবেন তার পূর্বেই আপনাকে বিজ্ঞ আদালতে জামিনের আবেদন করতে হবে এবং নির্ধারিত প্রতিটি তারিখে আপনাকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হতে হবে। যদি নির্ধারিত তারিখে আপনি আপনি বিজ্ঞ আদালতে হাজিরা না দেন তাহলে বিজ্ঞ আদালত চাইলে আপনার জামিন বাতিল করে আপনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করতে পারবেন।

যদি ইতপূর্বে ‍মামলা রুজুর পর পরই পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করে তাহলে বিজ্ঞ আইনজীবির মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে হবে এবং গ্রেফতারের পর যদি পুলিশ আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেন তাহলে আপনার আইনজীবির মাধ্যমে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করতে হবে। মামলার তদন্তকারী অফিসার বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করার পূর্বে উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমান দেখিয়ে আপনার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে সেটা প্রমান করতে হবে। (মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায়)

উল্লেখ্য যে, মামলার তদন্তকারী অফিসার মামলা তদন্তকালে যদি আপনার বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগগুলোর প্রমান না পায় তাহলে আপনাকে উক্ত মামলার দায় হতে অব্যহতি দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করবেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনাকে হয়রানির জন্য বাদীর বিরুদ্ধে (আপনার বিরুদ্ধে যে আইনে মামলা করা হয়েছে উক্তে আইনে) প্রসিকিউসন দাখিলের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করবেন।


►► গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
►► দলিল ও খতিয়ান বিষয়ক আলোচনা


যদি আপনার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমানিত হয়:

মামলার তদন্তকারী অফিসার যদি মামলার তদন্ত শেষে আপনার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে এবং মামলার বিচার শুরু হবে। যদি নিম্ন আদালত থেকে উক্ত মমলায় আপনার সাজা হয়ে যায় তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। মনে রাখবেন, আপনার বিরুদ্ধে যদি কেউ মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাহলে অবহেলা করবেন না। কোন দালালের নিকট না গিয়ে একজন বিজ্ঞ আইনজীবির শরনাপন্ন হবেন। কারন একটি মামলা আপনার সুন্দর ভবিষ্যত নষ্ট করে দিতে পারে। তাহলে আমরা আজকে শিখলাম মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় নিয়ে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে লিখে দিতে পারেন।

মিথ্যে মামলা নিয়ে প্রশ্ন উত্তর

১- প্রশ্ন: মিথ্যা মামলা হলে করণীয় কি?

উত্তর: একজন বিজ্ঞ আইনজীবী শরণাপন্ন হওয়া হবে এবং তার নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

২- প্রশ্ন: মিথ্যা মামলা দায়ের করলে শাস্তি কি?

উত্তর: দন্ডবিধির ২০৯ ধারা মতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড সহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।

৩- প্রশ্ন: কখন জামিন চাইতে হবে?

উত্তর: অভিযোগপত্র দাখিলের পূর্বে

৪- প্রশ্ন: নারী নির্যাতন মামলা কোথায় করব?

উত্তর: আপনার নিকটস্থ থানায় অথবা বিজ্ঞ আদালতে

৫- প্রশ্ন: মামলা নির্দোষ প্রমাণিত হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে?

উত্তর: মামলা নির্দোষ প্রমাণিত হলে ক্ষতিপূরণ যাওয়া যাবে

৬- প্রশ্ন: নারী নির্যাতন হেল্পলাইন নাম্বার কতো?

উত্তর: হেল্পলাইন ১০৯২১। বিনা খরচে এই টেলিফোন সেবা গ্রাহকদের জন্য ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।

৭- প্রশ্ন: নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তি?

উত্তর: নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১৭ ধারা মতে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ড হতে পারে।

অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

2 thoughts on “মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় এবং মিথ্যা মামলার শাস্তি”

  1. আমার উপর 354,143,114,323 ধারার মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। কিন্ত পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 354 ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে, বাকি ধারা দিয়ে মামলার বিচার কাজ চলছে, এবং অন্য একটিতে 325,307,354,143,114 ও 506 ধারা দিয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে,কিন্ত পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 307 ও 325 ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে, বাকি ধারা দিয়ে মামলার বিচার কাজ চলছে, এখন আমার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর প্রয়োজন। এমতাবস্থায় আমি কি পুলিশ ক্লিয়ারন্স পাবো বা আমার জন্য করণীয় কি জানালে উপকৃত হব।

    Reply
  2. যৌতুক ও নারী নির্যাতন মিথ্যা মামলা হয়েছে পুলিশ তদন্তে এই প্রতিবেদন দিয়েছে এখন এই মিথ্যা মামলা কারিদের বিরুদ্ধে কি ভাবে এবং কোন ধারাতে মামলা করা যাবে?

    Reply

Leave a Comment