দীর্ঘক্ষণ ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি মারাত্মক, সমাধান জানুন

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি মারাত্মক। আপনার উচিত ৬০% ভলিউম রেখে মাত্র ৬০ মিনিট ধরে গান শোনা অথবা নির্দিষ্ট কাজ করা।

তবে অতিরিক্ত সময় এবং অতিরিক্ত সাউন্ড আপনার কানের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বহন করবে।

সব সময় এয়ার বার্ডস দিয়ে গান শুনলে কানের কোন ক্ষতি হবে কিনা এমন প্রশ্ন অনেকের মধ্যে বিরাজমান থাকে।

বিষয়টি আবার এমন হয়ে দাঁড়ায় যে কাউকে প্রশ্ন করবো কি করবো না কনফিউশনে পড়ে যায়।

হ্যাঁ আজকে আমরা এমনই একটি অফ টপিক নিয়ে আলোচনা করব- এয়ার বার্ডস আপনার কানের কতটা ক্ষতি করতে পারে এবং এই ক্ষতির সমাধান কিসে সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে আমাদের আজকের এই ছোট্ট আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপহার।

“প্রশ্ন: ভাই আমরা যে রেগুলার এয়ার বার্ডস অথবা ইয়ারফোন দিয়ে গান শুনি এতে আমাদের কানের কোন ক্ষতি হবে কিনা?”

উঃ হ্যাঁ! ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি মারাত্মক। হয়তো একটা সময় আপনার কামকে একদম অচল করে ফেলবে।

যদি আপনি এ ধরনের এয়ার বার্ডস রেগুলার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে বলব সাউন্ড কমিয়ে রাখুন প্লিজ।

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি কি?

বর্তমানে আমরা এমন একটি সময় পার করছি যেখানে স্মার্টফোন বিহীন আমরা ছোট্ট একটা সময় পার করতে পারছিনা। আমাদের স্মার্টফোন সব সময় আমাদের প্রয়োজন পড়ে।

পাশাপাশি এয়ার বার্ডস অথবা ইয়ারফোন আমাদের প্রত্যেকদিন লাগছে এবং ব্যবহার করছি।

আবার কেউ এমনও আছে যে প্রত্যেকদিন ঘুমাবার পূর্বে অথবা ফ্রি সময় ইয়ারফোনের মাধ্যমে লাউড দিয়ে গান শুনেন।

আবার কেউ এমনও আছে দিনের ৪-৫ ঘন্টা সময় লাউড দিয়ে গান শুনে সময় পার করে দেন ইয়ারফোন এর সাথেই।

এতে করে অবশ্যই আপনার কানের সমস্যা ক্রিয়েট করে। মনে রাখবেন, ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি মারাত্মক।

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি কিভাবে?

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি

সহজ করে বলছি, আমাদের কান মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত। ১. আউটার ইয়ার, ২. মেডেল ইয়ার এবং ৩. ইনার ইয়ার।

সর্বশেষ যে ইনার ইয়ার রয়েছে সেখানে থেকে দেখতে পাবো Cochlea রয়েছে। যা মূলত একটি ফ্লুট ফিল স্ট্রাকচার। শুধু এখানেই শেষ নয়, এর মাঝে আরও যন্ত্র অংশ রয়েছে। যেমন- ইয়ারর্সেল রয়েছে।

তাহলে সাউন্ড আমাদের কানে কিভাবে পৌঁছায়? ধরুন আপনার পাশে একটি সাউন্ড হলো সেই সাউন্ড আপনাদের কানের মাঝে পৌঁছায়। আপনার কানের মেডেল স্থানে একটি পর্দা থাকে।

এবং সেই পর্দার নাগালে গিয়ে একটি কম্পন তৈরি করে। এবং এই ভাইব্রেশন বা কম্পন সেন্ড হয়ে যায় Cochlea তে।

এরপরে কানের মধ্যে যে ইয়ারর্সেল রয়েছে তারা আপনার এই কম্পন কে কনভার্ট করে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালে।

দেন ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল সেন্ড করে আমাদের ব্রেইনে। অতঃপর আমরা একটা কথা সম্পূর্ণ ভাবে শুনতে পাই। (হেব্বি ট্রিক্স তাই না)

এরপরে আপনার কানের মধ্যে যদি লাউডলি সাউন্ড প্রবেশ করে তখন কানেরএর মধ্যে থাকা ইয়ারর্সেল গুলো প্রচুর পরিমাণে কম্পন/ভাইব্রেশন তৈরি করে।

এবং আপনি যদি এই ইয়ারর্সেল গুলোকে প্রত্যেকদিন দীর্ঘ সময় ধরে কম্পন তৈরি করতে ব্যস্ত রাখেন তাহলে একটা সময়ে এসে এই ইয়ারর্সেল গুলো দুর্বল হয়ে যাবে।

আরো পড়ুনঃ Wavefun Rock Supper Bass TWS বাজেটের মধ্যে কেমন হবে?

সমস্যা কখন দেখা দিবে?

“প্রশ্ন: যারা বলছেন আমি বিগত দুই বছর ধরে এভাবে এয়ার বার্ডস অথবা হেডফোন দিয়ে লাউড দিয়ে গান শুনতেছি আমার তো কোন সমস্যা হচ্ছে না।”

উত্তর: হ্যাঁ একটু অপেক্ষা করুন আপনার সমস্যাটি খুব নিকটে। আপনি এখনো ইয়ং! ওয়েট করুন সময় আপনাকে নাড়া দিবে।

খেয়াল করলে দেখতে পারবেন অনেক বয়স্ক মানুষ খুব ভালো শুনতে পায় আবার অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছে সে ততটা ভাল শুনতে পায়না।

যারা লাউড অতিরিক্ত লাউড দিয়ে শুনতো তারা হয়তো বয়স্ক হয়ে শুনতে পাচ্ছে না এখন। কিন্তু অন্যান্য কারণেও হতে পারে।

তবে আমাদের ইয়ং থাকতে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত এবং আমাদের সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।

সাবধানতা কিভাবে?

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি

রেগুলার গান আমাদের শুনতে হবে। আবার আমার অভ্যাস হয়ে গেছে রেগুলার গেমিং করতে হবে।

এখন এই কাজে তো আমাকে ব্যবহার করতেই হবে এয়ার বার্ডস অথবা হেডফোন। তাহলে আমি কিভাবে সাবধানতা অবলম্বন করব?

দেখুন একটা সিস্টেম রয়েছে “৬০/৬০”। আপনি একটা এয়ার বার্ডস সর্বোচ্চ ৬০ মিনিটের জন্য কানের মধ্যে ধারণ করতে পারেন। অবশ্যই ৬০% ভলিউম লেভেলে।

৬০ মিনিট ৬০% লেভেলে গান শোনার পরে আপনি রেস্ট নেন। আপনার কাজগুলো সেরে ফেলেন। এরপরে আপনি আবার পুনরায় শুনুন ৬০ মিনিট তাহলে ঠিক আছে।

এমন অনেকেই আছে যারা টানা ৫ ঘন্টা গান শুনতে থাকে। আবার অনেকেই যে বড় ভুল করেন সেটা হচ্ছে-

নির্দিষ্ট একটি কানে গান শুনতে থাকেন অথবা যে কোন কারনে এয়ার বার্ডস কানের মধ্যে সেট করে রেখেন।

এই কাজটি ভুলেও করবেন না। আপনি যদি ১ কানেই বারবার পর্যাপ্ত সাউন্ড দিয়ে গান শুনেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা টা ঐ কানে বেশি হয়ে থাকে।

নিয়ম হচ্ছে দুই কানে সমান ভাবে ব্যবহার করা। এবং অবশ্যই “৬০/৬০” যে বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে সেটি মাথায় রাখবেন। ৬০% এর বেশি সাউন্ড যেন কখনোই না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

আমাদের বদ অভ্যাস

ইয়ারফোন ব্যবহারের ক্ষতি

এভাবে অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে গান শোনার ফলে একটা সময়ে আপনার অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাবে। একটা সময় দেখবেন হেডফোন বিহীন গান অথবা কথা বলতে পারছেন না।

একটা সময় মনে হবে যে আমার তো সাউন্ড কম মনে হচ্ছে আরো বেশি সাউন্ড দিয়ে গান শুনতে হবে।

এভাবে প্রতিনিয়ত আপনাকে বেশি সাউন্ড দিয়ে গান শুনতে শুনতে একপর্যায়ে আপনার কানের ইয়ারর্সেল গুলো নষ্ট হয়ে যাবে।

কানের ইয়ারর্সেল গুলো নষ্ট হওয়ার ফলে আপনি কানে শুনতে পাবেন না। অতঃপর আপনি সারা জীবনের জন্য আপনার শরীরের একটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কে পঙ্গ করে দিচ্ছেন।

আজকে থেকে আমরা যারা এয়ার বার্ডস অথবা হেডফোন ইউজার আছে তারা অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করবো।

অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে আমরা আর দীর্ঘ সময় ধরে কানের মধ্যে হেডফোন লাগিয়ে রাখব না।

অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।  আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment