ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় অনেক রয়েছে তবে আজকে আমরা জানবো মাত্র কয়েকটা উপায় সমূহ। ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ যা থেকে আমাদের অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।
হেপাটাইটিসের টিকা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাঁরা এখনো হেপাটাইটিস টিকা গ্রহণ করতে পারেননি তারা দ্রুত হেপাটাইটিস টিকা গ্রহণ করুন। যারা হেপাটাইটিস টিকা গ্রহণ করতে পারেননি তাঁদের লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি।
লিভারে যেন চর্বি না জমে আমাদের অবশ্যই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উত্তরবঙ্গে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
তারা অনেক দিন খাদ্যশস্য রেখে দেয়। তাই কোনভাবে জনি লিভারের চর্বি না জমতে পারে সেদিকে আমাদের সর্তকতা থাকতে হবে।
ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ, যা একটা পরিবারকে নিমিষেই সুখ-শান্তি থেকে বঞ্চিত করে ফেলে।
আমাদের সংসারে সুখ শান্তি কেড়ে নেয়ার আগেই আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করার বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হওয়া উচিত।
ক্যান্সার হওয়ার কারণ সমূহ-
বেশ কিছু কারণে এই মরণ ব্যাধি ক্যান্সার হয়ে থাকে। এর মধ্যে বিশেষ কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো।
বংশগত কারণ – পূর্বপুরুষের ক্যান্সার হয়েছে এমন কোন ফ্যামিলির বংশগত কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকতে পারে)
জীবনযাত্রায় অনিয়ম – বর্তমানে অনেক মানুষ আছেন যারা নিয়মিত খাবারের দিকে মনোযোগ দেন না বিভিন্ন সম্পূর্ণ খাবার খেয়ে থাকেন ঘুমের সময় দিতে পারেন না তাদের জন্য এটা ঝুঁকিপূর্ণ।
নেশা দ্রব গ্রহণ – যারা নেশাগ্রস্ত তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ যেমন- সিগারেট, মদ, হিরোইন, ইয়াবা ইত্যাদি নেশা দ্রব গ্রহণ করে।
এতে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং ফুসফুস প্রতিনিয়ত নষ্ট হতে থাকে।
অনিরাপদ খাদ্য – ফরমালিন যুক্ত খাবার, নানা ধরনের রং বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় এমন খাবার, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার,
রুচি অসম্পূর্ণ খাবার আমাদেরকে ক্যান্সারের দিকে টেনে নিতে সহযোগিতা করে।
আসুন জেনে নিই ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়–
পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন
খাদ্য গ্রহণের পূর্বে আমাদের অবশ্যই যাচাই করা উচিত খাদ্য যেন সুস্বাদু এবং রুচি সম্পন্ন হয়ে থাকে।
চর্বিযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া রাস্তার খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো, কেননা এ ধরনের খাবার গুলো আপনার শরীরের ফ্যাট এবং বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে থাকে।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার, শাকসবজি, ফলমূল রাখুন, এটি আপনার শরীর ঠিক থাকবে এবং ক্যান্সার নামক সমস্যা থেকে অনেকটা দূরে থাকতে পারবেন।
প্রখর রোদে থাকবেন না
রোদ ভিটামিন ডি পেতে সহযোগিতা করে তবে প্রখর রোদ শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এটি মেলানোমা এবং ত্বকের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরসরি সূর্যের আলোর নিচে থাকবেন না।
যাদের ভিটামিন-ডি প্রয়োজন তারা ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত গরমে অতিরিক্ত রোদের মধ্যে থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এ সময় ছাতা, সানগ্লাস ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এতে করে প্রখর রোদ থেকে অনেকটা মুক্তি লাভ করতে পারবেন। মনে রাখবেন কোনকিছুই অতিরিক্ত ভালো না।
ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন
দেহের ওজন বেড়ে গেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ওজন বেড়ে গেলে উচ্চরক্তচাপ সৃষ্টি হয় এসময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি কোলন ক্যান্সার, যকৃত ও খাদ্য নালির ক্যান্সারের কারণ। স্তন ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ অতিরিক্ত ওজন।
যতটা সম্ভব নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করুন এবং যতটা সম্ভব ওজন কমিয়ে নিজেকে সতেজ এবং তাজা রাখুন।
শরীর ফিট থাকলে দেখবেন অনেক রোগ আছে যেগুলো আপনাকে স্পর্শ করতে পারে না যারা আপনার মধ্যে কোনো ধরনের কোনো রোগ প্রয়োগ করতে পারে না।
রোজার মাসের ডায়েট চার্ট – যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এই নতুন প্রতিবেদন, এটি আপনাকে ওজন কমাতে সহায়তা করবে।
ক্যান্সার পরীক্ষা করান
প্রতিবছর নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে ক্যান্সারের পরীক্ষা করান এতে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পরবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পরলে নিরাময় সহজ হয়, আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে।
বাঙ্গালীদের মধ্যে এমন কালছার বেশি রয়েছে যে, আমাদের কোন একটা অসুখ হলে আমরা সেটার প্রতি মনোযোগ দেই না।
যার ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের মধ্যে সেই রোগটি বড় হতে থাকে।
আমরা যদি প্রতিবছর ক্যান্সার পরীক্ষা করি এতে করে আমরা খুব সহজে এটার নিরাময় করতে পারে।
কিন্তু এটা যদি আমাদের শরীরের মধ্যে ফিক্সট হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য নিরাময় করা কষ্টকর।
আবার অনেক ডাক্তারি ভাষায় বলে থাকেন যে ক্যান্সার হলে সেটির কোন চিকিৎসা হয় না, তবে ক্যান্সার যেন না হয় সে বিষয়ে নিজেকে সচেতন রাখা উচিত।
ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় যেসব খাবার
মিষ্টি আলুঃ বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। গবেষণায় দেখা যায় উচ্চমাত্রায় বিটা ক্যারোটিন শরীরে থাকলে তা কোলন, স্তন, পেট ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
তাই মিষ্টি আলু খেতে পারেন এতে করে যেমন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাবে তেমনি আপনার শরীরে একটা ইউনিক প্রোটিন জোগাতে সহায়তা করবে।
সাওয়ারসপঃ প্রাকৃতিক ক্যান্সার প্রতিরোধক সাওয়ারসপ ফল। আমরা কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানি।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সাওয়ারসপ ফল কেমোথেরাপির চেয়ে দশ হাজার গুণ শক্তিশালী।
পত্র বহুল সবুজ শাক-সব্জীঃ পালং শাক, কেইল, কলার্ড গ্রীন, রোমেইন ও আরুগুলা লেটুস, ওয়াটার ক্রেস (হেলেঞ্চা শাক) সহ দেশীয় সবুজ শাক-পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেলগুলো, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম।
সবুজ শাকসবজি ফলমূল এগুলো ক্যান্সারকে শরীরের মধ্যে প্রয়োগ করতে দেয় না।
এবং শরীরে বিভিন্ন ইউনিট প্রোটিন জোগাতে সহায়তা করে তাই প্রতিনিয়ত সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে পারেন।
কিছু কথা
তাহলে আমরা আজকে শিখলাম ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় সমূহ। নিজেকে সচেতন এবং আরো সতেজ রাখতে এই উপায়গুলো অবলম্বন করুন এতে আপনি এবং আপনার ফ্যামিলির সবাই ভালো থাকবেন।