প্রেসার লো হলে করণীয় – অনেকেই লো প্রেসারে ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে হঠাৎ ব্লাড প্রেসার কমে যায়। যার ফলে দেখা দেয় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা। এক্ষেত্রে রোগী চোখে ঝাপসা দেখেন, মাথা ঘোরায় কিংবা অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের কার্ডিওলজি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. উত্তম কুমার দাস বলেন, লো প্রেসারের সমস্যায় ভুগলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। রক্তশূন্যতা দূর করে এমন খাবার খেতে পারেন। এ ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ও বিশ্রামে থাকুন।
নিম্ন রক্তচাপের কারণ
- কোনো কারণে পানিশূন্যতা হওয়া।
- ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া।
- খাবার ঠিকমতো বা সময়মতো না খাওয়া।
- ম্যাল অ্যাবসরবশন বা হজমে দুর্বলতা।
- কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা।
- শরীরে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা।
- রক্তশূন্যতা।
চিকিৎসা
লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
যদি শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়, তাহলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই লো প্রেশার ঠিক হয়ে যায়।
তবে যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি নিম্ন রক্তচাপ আছে, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রেসার লো হলে করণীয়
- নিম্ন রক্তচাপের ভুক্তভোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকবেন না।
- অনেকক্ষণ ধরে বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে ও ধীরে ধীরে উঠুন।
- ঘন ঘন হালকা খাবার খান। বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- খাবার সময় পাতে এক চিমটি করে লবণ খেতে পারেন।
- দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় গ্লুকোজ ও স্যালাইন রাখুন।
প্রেসার লো হলে করণীয় এবং সমাধান
লবণ পানি: লবণে রয়েছে সোডিয়াম যা রক্তচাপ বাড়ায়। তবে পানিতে বেশি লবণ না দেওয়াই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ চিনি ও এক-দুই চা চামচ লবণ মিশিয়ে খেলে।
তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিনি বর্জন করতে হবে।
কফি: স্ট্রং কফি, হট চকলেট, কোলাসহ যেকোনো ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়ায়। হঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন।
যারা অনেকদিন ধরে এ সমস্যায় ভুগছেন তারা সকালে ভারি নাশতার পর এক কাপ স্ট্রং কফি খেতে পারেন। তবে সবসময় লো প্রেসার হলে কোলা না খাওয়াই ভালো। কারণ এর অন্যান্য ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে।
কিছমিছ: হাইপোটেনশনের ওষুধ হিসেবে অতি প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে কিছমিস। এক-দুই কাপ কিছমিছ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
সকালে খালিপেটে সেগুলো খান। সঙ্গে কিছমিছ ভেজানো পানিও খেয়ে নিন। এছাড়াও পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চীনাবাদাম খেতে পারেন।
ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবার
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবার কম থাকলে রক্তাল্পতার আশঙ্কা দেখা দেয়। তা থেকেও রক্তচাপ কম হয়ে যেতে পারে।
সেই জন্য ডিম, চিকেন ব্রেস্ট, দই, বিফ লিভার, স্যামন মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১২ রয়েছে।
কিছু পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন
জেনে রাখুন, মানসিক অবস্থার অবনতিও ব্লাড প্রেসার কমাতে পারে। অমূলক ভয়ভীতি, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও অন্যান্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে টেম্পোরারি হাইপোটেনশন হতে পারে।
তাই ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে জটিল পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন বিষয়ে নিজেকে না জড়ানোই ভালো।
►► এলাচের অবিশ্বাস্য উপকারিতা
►► নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কিছু কথা
প্রেসার লো হলে করণীয় কি সে বিষয়ে আমরা উপরে বেশ কিছু কারণ দেখেছি এবং এটার সমাধানের লক্ষ্যে বেশকিছু ফলাফল আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।
আশা করি আপনারা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন যে লো প্রেসার হলে করণীয় কি সে বিষয়ে।
যেকোনো রোগ সেটা কোন সহজ হতে পারে না সেটাকে অবশ্যই আমাদের গুরুত্ব দেয়া উচিত।
আমরা যদি সব লোক কে পাত্তা দিয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাহলে হয়তো আমাদের শরীরকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা সম্ভব।
যাদের লো প্রেসার হওয়ার সমস্যা রয়েছে তারা কিছু খাবার বর্জন করুন যাতে করে নিজের শরীরকে ফিট রাখতে পারেন যাতে করে বিভিন্ন সময়ে লোপেসারের আক্রমণ আপনাকে দূরে রাখতে পারে।