বন্ধুরা আজকে আমরা চুক্তি আইন কাকে বলে? সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক চুক্তি আইন কি?
চুক্তি শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে কনট্রাক। শব্দটি ল্যাটিন শব্দ কন্ট্রাকশন হতে এসেছে। চুক্তি এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে একত্রিকরণ। সংক্ষেপে দুই বা ততোধিক ব্যক্তিকে সাধারণ অভিপ্রায়ে মতৈক্যে প্রতিষ্ঠিত করা ও তা বাস্তবায়ন করাই চুক্তির উদ্দেশ্য ।
বৃটিশ কমন ল’য়ে একই সংজ্ঞা দেখা যায়। স্যামন্ডের (Salmond) মতে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে দায়-দায়িত্ব সৃষ্টি করে ও নির্ণয় করে এমন সম্মতিকে (Agreement) বলে।
চুক্তি আইন কাকে বলে?
স্যার ফ্রেডারিক পোলকের (Pollock) মতে সংজ্ঞানুসারে আইনে বলবৎযোগ্য প্রতিটি সম্মতি ও প্রতিশ্রুতিকে চুক্তি বলা যেতে পারে।
উনিশ শতকে চুক্তি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পুনরায় চুক্তি আইন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কার্যকর করা হয়। বাংলাদেশে প্রযোজ্য ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের ২ (জ) ধারায় বলা হয়েছে যে, আইনে বলবৎযোগ্য সম্মতি হচ্ছে চুক্তি।
দুই বা ততোধিক ব্যক্তি যখন কোন বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করে অর্থাৎ এক ব্যক্তির প্রস্তাব অন্য ব্যক্তি গ্রহণ করে এবং সমর্থনে কোন প্রতিদান থাকে, তবে তাদের মধ্যে এক অঙ্গীকারের সৃষ্টি হয়। এ অঙ্গীকার যদি ১০ ধারায় বর্ণিত উপাদানগুলি বর্তমান থাকে তবে তাদের মধ্যে একটি চুক্তি গঠিত হয় এবং পারস্পারিক বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করে।
উদাহরণ:
- ‘ক’ তার গাভীটি ‘খ’ এর নিকট পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রয় করার প্রস্তাব দেয়।
- ‘খ’ তাতে সম্মত হয়।
- এই সম্মতি জ্ঞাপনের সাথে সাথেই তাদের মধ্যে এক অঙ্গীকার বা একরারের সৃষ্টি হয়
- কিন্তু আইনগত বাধ্যবাধকতাকতার সৃষ্টি করে না।
চুক্তি আইন কাকে বলে?
নিম্নোক্ত উপাদানগুলি বর্তমান থাকলে বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করে:
‘ক’ ও ‘খ’ উভয়ের যদি চুক্তি করার যোগ্যতা থাকে অর্থাৎ তারা যদি নাবালক না হয় কিংবা অসুস্থ মনের অধিকারী বা অপ্রকৃতিস্থ না হয় কিংবা কোন আইনে তাদের যোগ্যতা খর্ব না করা হয়ে থাকে; উভয় পক্ষই স্বাধীনভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকে অর্থাৎ কোন প্রকার চাপ, ভীতি প্রদর্শন, প্রতারণা, ভ্রান্তি ও মিথ্যা বিবরণ জড়িত না থাকে।
►► আরো পড়ুন: ৯ম-১০ম শ্রেণি: বাংলা-২য় পত্র ১ম অধ্যায়ের MCQ উত্তরসহ
►► আরো পড়ুন: ৯ম-১০ম শ্রেণি: কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায়ের MCQ উত্তরসহ
চুক্তির প্রতিদান বৈধ হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে গাভীটি অর্পণ ও এর মূল্য প্রদান পারস্পারিক প্রতিদান যা নিঃসন্দেহে বৈধ। চুক্তি আইনের ২৩ ধারা অনুযায়ী যে প্রতিদান আইনে নিষিদ্ধ নয়, কিংবা প্রচলিত আইনের কোন বিধানের পরিপন্থী নয়, কিংবা অন্যের শরীর বা সম্পত্তির ক্ষতিকারক নয়, কিংবা নৈতিকতা বা জননীতির পরিপন্থী নয় তা বৈধ।
- এরুপ বিক্রয়ের উদ্দেশ্য অবৈধ না হয়ে থাকে।
- প্রচলিত কোন আইনে এ বিক্রয় নিষিদ্ধ না হয়ে থাকে।
- অতএব, লক্ষ করা যায় যে, সকল অঙ্গীকারই চুক্তির পর্যায়ে পড়ে না।
- যে সকল অঙ্গীকার চুক্তি আইনের নির্দেশ মত গঠিত হয় সেগুলি চুক্তি এবং চুক্তি আইনের আওতাভূক্ত।
অর্থাৎ কোন কোন অঙ্গীকার চুক্তির মর্যদা পাবে তা নির্দেশ করে চুক্তি আইন।
- জিআর সিআর মামলা কি?
- মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় এবং মিথ্যা মামলার শাস্তি
- ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ আইন জানুন!
- পর্নোগ্রাফি আইন সম্পর্কে আলোচনা ও বিচার
- মিথ্যা মামলা হলে করণীয় কি?