মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ থেকে ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊন-বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নব-জাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়েছে। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বংশে জন্ম হলেও মধুসূদন যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে মাইকেল মধুসূদন নাম গ্রহণ করেন এবং পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন নিজ মাতৃ ভাষার প্রতি মনোযোগ দেয়। এ আগে তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্য-রচনা করেন।
মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক।
তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য রচনা করেন।
মধুসূদনের ব্যক্তিগত জীবন ছিলো নাটকীয় এবং বেদনাঘন। মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতায় এই মহা-কবির অকাল মৃত্যু হয় এক শোকাবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে।
জীবন:
মাইকেল মধুসূদন দত্ত:
১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলা প্রেসিডেন্সির যশোর জেলার (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার) সাগরদাঁড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারে মধুসূদন দত্তের জন্ম হয়।
তিনি ছিলেন রাজনারায়ণ দত্ত ও তার প্রথমা পত্নী জাহ্নবী দেবীর একমাত্র সন্তান।
রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার সদর দেওয়ানি আদালতের এক খ্যাতনামা উকিল।
মধুসূদনের যখন তেরো বছর বয়স, সেই সময় থেকেই তাকে কলকাতায় বসবাস করতে হত।
খিদিরপুর সার্কুলার গার্ডেন রিচ রোডে (বর্তমানে কার্ল মার্কস সরণী) অঞ্চলে তিনি এক বিরাট অট্টালিকা নির্মাণ করে ছিলেন।
শিক্ষাজীবন:
মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান, সাগরদাঁড়ি, যশোর, বাংলাদেশ। মধুসূদনের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার মা জাহ্নবী দেবীর কাছে।
জাহ্নবী দেবীই তাকে রামায়ণ, মহা-ভারত, পুরাণ প্রভৃতির সঙ্গে সুপরিচিত করে তোলেন। সাগরদাঁড়ির পাশের গ্রামের শেখ-পুরা মসজিদের ইমাম মুফতি লুৎফুল হকের কাছে তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়।
বিদ্বান ইমামের কাছে তিনি বাংলা, ফারসি ও আরবি পড়েছেন। সাগরদাঁড়িতেই মধুসূদনের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়।
১৩ বছর বয়সে মধুসূদন কলকাতায় আসেন। স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়র পর তিনি তদনীন্তন হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ব-বিদ্যালয়) ভর্তি হয়।
মধুসূদন মেধাবী ছাত্র ছিলো। তাই অচিরেই কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি. এল. রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হিসেবে হয়ে ওঠেন।
রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্য-প্রীতি সঞ্চারিত করে ছিলো। হিন্দু কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ডিরোজিওর স্বদেশানুরাগের স্মৃতিও তাকে বিশেষ উদ্বুদ্ধ করত।
এছাড়া কলেজে তার সহপাঠী ছিলো ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক, প্যারীচরণ সরকার প্রমুখ ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
১৮ বছর বয়সেই মহাকবি হওয়ার ও বিলাতে যাওয়া উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার মনে বদ্ধমূল হয়ে যায়।
আড়ো পড়ুন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন কাহিনী
আড়ো পড়ুন: আবুল কাশেম ফজলুল হক জীবনী
শিক্ষাজীবন:
১৮৪৩ সালে রেভারেন্ড কৃষ্ণ-মোহন বন্দ্যো-পাধ্যায়ের নিকট মধুসূদন খ্রিষ্ট-ধর্ম গ্রহণের ইচ্ছে ব্যক্ত করেন।
এরপর ওই বছরই ৯ ফেব্রুয়ারি মিশন রো-তে অবস্থিত ওল্ড মিশন চার্চ নামে এক অ্যাংলিক্যান চার্চে গিয়ে তিনি খ্রিষ্ট-ধর্ম গ্রহণ করেন।
তাকে দীক্ষিত করেছিলেন পাদ্রী ডিলট্রি। তিনিই তার “মাইকেল” নামকরণ করেন। মধুসূদন পরিচিত হন “মাইকেল মধুসূদন দত্ত” নামে।
তার এই ধর্মান্তর সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। রাজনারায়ণ দত্ত তার বিধর্মী পুত্রকে ত্যাজ্য-পুত্র ঘোষণা করেন।
খ্রিস্ট-ধর্ম গ্রহণের পর মাইকেল মধুসূদন শিবপুরের বিশপস কলেজে থেকে পড়শোনা চালিয়ে যান।
এখানে তিনি গ্রিক, লাতিন, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষা শিক্ষা করেন। রাজ-নারায়ণ দত্ত তাকে পরি-ত্যাগ করলেও, বিশপস কলেজে পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করছিলেন।
৮বছর পর তিনি টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। বিশপস কলেজে কয়েকজন মাদ্রাজি ছাত্রের সথে মধুসূদনের বন্ধুত্ব হয়ে ছিলো।
বিশপস কলেজে অধ্যয়ন শেষ করে যখন কলকাতায় চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন মধুসূদন।
তখন তার সেই মাদ্রাজি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (অধুনা চেন্নাই) চলে যান মাইকেল মধুসূদন।
কথিত আছে, আত্মীয়-স্বজনের অজ্ঞাতসারে নিজের পাঠ্য-পুস্তক বিক্রি করে সেই টাকায় মাদ্রাজ গিয়ে ছিলো তিনি।
কর্মজীবন:
মাইকেল মধুসূদন মাদ্রাজেও বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেনি। স্থানীয় খ্রিষ্টান ও ইংরেজদের সহায়তায় তিনি একটি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষকের চাকরি পান।
তবে বেতন যা পেতেন, তাতে তার ব্যয়সংকুলান হতো না। এই সময় তিনি ইংরেজি পত্র-পত্রিকায় লিখতে শুরু করেন।
মাদ্রাজ ক্রনিকল পত্রিকায় ছদ্ম-নামে তার কবিতা প্রকাশিত হতে থাকে। হিন্দু ক্রনিকল নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন তিনি।
কিন্তু অল্পকালের মধ্যেই অর্থাভাবে পত্রিকাটি বন্ধ করে দিতে হয়।
২৫বছর বয়সে নিদারুণ দারিদ্র্যের মধ্যেই তিনি দ্য ক্যাপটিভ লেডি তার প্রথম কাব্যটির রচনা করেন।
কবি ও দক্ষ ইংরেজি লেখক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
বিবাহ:
মাদ্রাজে আসার কিছুকাল পরেই মাইকেল মধুসূদন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ যুবতীকে বিবাহ করেন।
উভয়ের দাম্পত্যজীবন ৮বছর স্থায়ী হয়ে ছিলো। রেবেকার গর্ভে মধুসূদনের ২পুত্র ও ২কন্যার জন্ম হয়।
মাদ্রাজ জীবনের শেষ পর্বে রেবেকার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার অল্পকাল পরে মধুসূদন এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিবাহ করেন।
আঁরিয়েতা মাইকেল মধুসূদনের সারা জীবনের সঙ্গিনী ছিলেন। এদিকে মাইকেল তার এক কপি দ্য ক্যাপটিভ লেডি বন্ধু গৌরদাস বসাককে উপহার পাঠালে, গৌরদাস সেটিকে জে ই ডি বেথুনের কাছে উপহার হিসেবে পাঠান।
উক্ত গ্রন্থ পাঠ করে অভিভূত বেথুন মাইকেলকে চিঠি লিখে দেশে ফিরে আসতে এবং বাংলায় কাব্য রচনা করতে পরামর্শ দেন।
১৮৫৬ সালে মাইকেল মধুসূদন কলকাতায় ফিরে আসেন। পত্নীকে সেই সময় তিনি সাথে আনেনি।
সাহিত্য জীবন:
মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পদা-র্পণ করেন। রামনারায়ণ তর্করত্ন বিরচিত ‘রত্নাবলী’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তিনি বাংলা নাট্য-সাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব বোধ করেন।
এই অভাব পূরণের লক্ষ্য নিয়েই তিনি নাটক লেখায় আগ্রহী হয়ে ছিলো। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক।
এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন ২টি প্রহসন, যথা: ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ এবং ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ এবং পূর্ণাঙ্গ ‘পদ্মাবতী’ নাটক।
পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অমিত্রাক্ষরে লেখেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্য।
এরপর একে একে রচিত হয় ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’ (১৮৬১) নামে মহাকাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬১), ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক (১৮৬১), ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতা (১৮৬৬)।
তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য।
তার অন্যান্য উল্লেখ-যোগ্য গ্রন্থাবলি হলো দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী (নাটক), পদ্মাবতী (নাটক), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর বধ ইত্যাদি।
ফ্রান্সে:
এই রাস্তার একটি ভবনে থাকতেন কবি: 12 Rue Des Chantiers, ভার্সাই, ফ্রান্স – যে ভবনে থাকতেন কবি, কবি ইংল্যান্ডে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করতে গিয়ে ছিলো,
কিন্তু সেখানের আবহাওয়া এবং বর্ণবাদিতার কারণে বেশি দিন ইংল্যান্ডে থাকেনি। তারপর তিনি ১৮৬০ সালে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে চলে আসেন। কিন্তু তার আর্থিক অবস্থা ছিলো খুব খারাপ।
একমাত্র ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর জন্য তিনি তার আইন বিষয়ে পড়া শেষ করে ভারতে আসতে সক্ষম হয়ে ছিলো। কিন্তু তিনি কখনোই কলকাতায় তার এই লেখা-পড়াকে কাজে লাগানি, উপরন্তু দরিদ্রতার জন্য মৃত্যুবরণ করেন।
সাহিত্য জীবনের অনুপ্রেরণা
মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর সাহিত্য জীবনে বিশেষ করে ইংরেজ কবি লর্ড বায়রনের সাহিত্য কর্ম এবং তাঁর জীবন দ্বারা অত্যন্ত বেশি অনু-প্রাণিত হয়ে ছিলো।
তাঁর মহান সৃষ্টি মেঘনাদ বধ মহাকাব্য প্রকাশ এবং এটি পরিচিত করে তোলা যদিও খুব সহজ ছিলো না, তারপরও তিনি নিজেকে মহা-কাব্যটির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে এক স্বতন্ত্রভাব প্রকাশ করে ছিলো।
তারই অংশ হিসেবে তিনি কাব্যে প্রথম হোমেরিক স্টাইলের লেখার প্রবর্তন করেন। তিনি এক সময় নিজেকে বলে ছিলো।
“আমি এক সকালে উঠে নিজেকে সফল হিসেবে পাই নি, এই কাব্যের সফলতা বহু বছরের কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমেই সম্ভব হয়ে ছিলো।”
ভাষা গত দক্ষতা:
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলো বহু ভাষাবিদ। মাতৃভাষা ছাড়া তিনি আরো ১২টি ভাষা জানতেন। শিশু কালে গ্রামের টোল থেকে ফারসি ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে তার ভাষা শিক্ষার শুরু হয়।
তিনি ইংরেজি ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলুগু, তামিল মাতৃভাষা ছাড়া তিনি আরো ১২টি ভাষা জানতেন ইত্যাদি ভাষায় অনাগোল কথা বলতে পারতেন।
তিনি এমনকি ফারসি ও ইতালীয় ভাষায় কবিতাও লিখতে পারতেন।
নাটক:
বাংলা নাটকে মধুসূদনের আবির্ভাব আকস্মিক। ১৮৫২ সালে তারাচরণ শিকদার, জে. সি. গুপ্ত ও রাম-নারায়ণ তর্করত্নের হাত ধরে বাংলায় শৌখিন রঙ্গমঞ্চে নাট্য মঞ্চায়ন শুরু করেন।
এই সময় লেখা নাটক-গুলির গুণগত মান খুবই ভালো ছিল না। ১৮৫৮ সালে পাইক পাড়ার জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র সিংহ ও প্রতাপচন্দ্র সিংহের পৃষ্ঠ-পোষকতায় কলকাতার বেলগাছিয়া নাট্যমঞ্চে রাম-নারায়ণ তর্করত্নের রত্নাবলী নাটকটি অভিনীত হয়। শিল্প-গুণবিবর্জিত এই সাধারণ নাটকটির জন্য জমিদারদের বিপুল অর্থব্যয় ও উৎসাহ দেখে মাইকেল মধুসূদনের শিক্ষিত মন ব্যথিত হয়ে ওঠে।
এরপর তিনি নিজেই নাট্যরচনায় ব্রতী হন। রামনারায়ণ তর্করত্নের সংস্কৃত নাট্যশৈলীর প্রথা ভেঙে তিনি পাশ্চাত্য শৈলীর অনুসরণে প্রথম আধুনিক বাংলা নাটক রচনা করেন।
মধুসূদনের নাট্যচর্চার কাল ও রচিত নাটকের সংখ্যা ২ই সীমিত। ১৮৫৯ থেকে ১৮৬১ – এই তিন বছর তিনি নাট্যচর্চা করেন। এই সময়ে তার রচিত নাটকগুলি হল : শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯), একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৬০), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ (১৮৬০), পদ্মাবতী (১৮৬০), কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১)। এছাড়া মৃত্যুর পূর্বে মায়াকানন (১৮৭৪) নামে একটি অসমাপ্ত নাটক।
শর্মিষ্ঠা:
মধুসূদন দত্ত রচিত ‘শর্মিষ্ঠা’ শর্মিষ্ঠা একটি পৌরাণিক নাটক। রচনাকাল ১৮৫৯। এটিই আধুনিক পাশ্চাত্য শৈলীতে রচিত প্রথম বাংলা নাটক।
নাটকের আখ্যানবস্তু মহাভারতের আদিপর্বে বর্ণিত রাজা যযাতি, শর্মিষ্ঠা ও দেবযানীর ত্রিকোণ প্রেমের কাহিনী থেকে গৃহীত।
অবশ্য পাশ্চাত্য নাট্যশৈলীতে লিখলেও, মধুসূদনের এই নাটকে সংস্কৃত শৈলীকে সম্পূর্ণ বর্জন করেন নি।
এই নাটকের কাব্য ও অলংকার-বহুল দীর্ঘ সংলাপ, ঘটনার বর্ণ-নাত্মক রীতি, প্রবেশক, নটী, বিদুষক প্রভৃতির ব্যবহার সংস্কৃত শৈলীর অনুরূপ।
আবার ইংরেজি সাহিত্যের রোম্যান্টিক ধারার প্রভাবও এই নাটকে স্পষ্ট। প্রথম রচনা হিসেবে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও, সেই যুগের ইংরেজি-শিক্ষিত পাঠক-সমাজে এই নাটকটি খুবই সমাদৃত হয়।
বেলগাছিয়া রঙ্গমঞ্চে সাফল্যের সঙ্গে নাটকটি অভিনীতও হয়।
একেই কি বলে সভ্যতা ও বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ:
শর্মিষ্ঠার পরে ১৮৬০ সালে মাইকেল মধুসূদনের রচনা করেন একেই কি বলে সভ্যতা ও বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ নামে ২টি প্রহসন।
এই প্রহসন ২টি তার ২টি শ্রেষ্ঠ নাট্য-রচনা। প্রথম নাটকটির বিষয় ছিলো ইংরেজি শিক্ষিত নব্য বাবু সম্প্রদায়ের উচ্ছৃঙ্খলতা ও ২য় টির বিষয় ছিলো সনাতনপন্থী সমাজ পতিদের নৈতিক চরিত্রের অধঃপতন।
এই নাটকে মাইকেলের মধুসূদনের পর্যবেক্ষণ শক্তি, সমাজ-বাস্তবতাবোধ ও কাহিনী, চরিত্র ও সংলাপ রচনায় কুশলতা বিশেষ প্রশংসা লাভ করে।
কিন্তু নাটকের বিষয়বস্তু নব্য ও সনাতনপন্থী উভয় সমাজকেই বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। তাই বেলগাছিয়া রঙ্গমঞ্চে নাটকটি অভিনীত হওয়ার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
এতে মাইকেল মধুসূদনের খুবই হতাশ হয়ে ছিলো এবং পরবর্তীকালে প্রহসন রচনা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ছিলো। একেই কি বলে সভ্যতা (প্রহসন)।
বুড়সালিকের ঘাড়ে রো পৃষ্ঠা:
পদ্মাবতী:
১৮৬০ সালেই মাইকেল মধুসূদন রচনা করেন পদ্মাবতী নাটকটি। এটিও পৌরাণিক নাটক। তবে এই নাটকের ভিত্তি পুরো-পুরি ভারতীয় পুরাণ নয়।
গ্রিক পুরাণের ‘অ্যাপেল অফ ডিসকর্ড’ গল্পটি ভারতীয় পুরাণের মোড়কে পরিবেশন করেছেন মাইকেল মধুসূদন। গ্রিক পুরাণের জুনো, প্যালাস ও ভেনাস এই নাটকে হয়েছেন শচী, মুরজা ও রতি।
হেলেন ও প্যারিস হয়ে ছিলো পদ্মাবতী ও ইন্দ্রনীল। ৩দেবীর মধ্যে রতিকে শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নির্বাচিত করলে অন্য ২দেবী ইন্দ্রনীলের প্রতি রুষ্টা হন এবং ইন্দ্রনীলের জীবনে বিপর্যয় নামিয়ে আনেন।
শেষে রতি ও ভগবতীর চেষ্টায় ইন্দ্রনীল উদ্ধার পান এবং বিচ্ছিন্না স্ত্রী পদ্মাবতীর সঙ্গে তার মিলন ঘটে। মূল গ্রিক উপাখ্যানটি বিয়োগান্তক হলেও, মাইকেল এই নাটকটিকে ইংরেজি ট্র্যাজি-কমেডির ধাঁচে করেছেন মিলনান্তক।
এই নাটকে সংস্কৃত নাট্যরীতির প্রভাব অল্পই। প্লট-নির্মাণ, নাটকীয় দ্বন্দ্ব উপস্থাপনা ও চরিত্র চিত্রণে মাইকেল মধুসূদনের০ এখানে আগের থেকে পরিণত হয়ে ছিলো।
মায়াকানন:
কৃষ্ণ-কুমারী নাটক রচনার পর মাইকেল মধুসূদনের কাব্য রচনায় পুরোদমে মনোনিবেশ করেন।
শেষ জীবনে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে বেঙ্গল থিয়েটারের কর্ণধার শরচ্চন্দ্র ঘোষের অনুরোধে তিনি মায়াকানন নাটক রচনায় কাজ পূনূরয় শুরু করেন।
নাটকটি তিনি শেষ পর্যন্ত শেষ করতে পারেন নি। করে ছিলো ভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। এই নাটকটির শিল্পমূল্য বিশেষ নেই।
মাইকেলের মধুসূদনের সৃষ্টি-প্রতিভার কোনো সাক্ষর এতে পাওয়া যায় না।
মেঘনাদবধ কাব্য:
মূল নিবন্ধসমূহ: মেঘনাদবধ কাব্য ও মহাকাব্য মাইকেল মধুসূদন দত্তের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি হচ্ছে – অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণ উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহা-কাব্যটি।
চরিত্র চিত্র হিসেবে রয়েছেন : রাবণ,সীতা, ইন্দ্রজিৎ, সরমা, প্রমীলা প্রমুখ।
তিনি তার কাব্যকে অষ্টাধিক সর্গে বিভক্ত করেছেন এবং সংস্কৃত অলঙ্কারশাস্ত্র অনুযায়ী এতে নগর, বন, উপবন, শৈল, সমুদ্র, প্রভাত, সন্ধ্যা, যুদ্ধ, মন্ত্রণা প্রভৃতির সমাবেশও করে ছিলো।
কিন্তু সর্গান্তে তিনি নতুন ছন্দ ব্যবহার করেন নি, সর্গশেষে পরবর্তী সর্গকথা আভাসিত করেন নি। যদিও তিনি বলে ছিলো,
“গাইব মা বীররসে ভাসি মহাগীত”
তবুও কাব্যে করুণ রসেরই জয় হয়েছে।
মেঘনাদবধ কাব্য রামায়ণ আহৃত কাহিনীর পুণরা-বৃত্তি নয়
-এটি নব-জাগ্রত বাঙালির দৃষ্টি নিয়তি-লাঞ্ছিত নবমানবতা
বোধের সকরুণ মহাকাব্যের রূপে অপূর্ব গীতি-কাব্য।
মেঘনাদবধ কাব্য এ দিক দিয়ে বাংলা কাব্য সাহিত্যে একক সৃষ্টি।”
মাইকেল মধুসূদন অতি আশ্চর্য্য-জনক ভাবে নির্মাণ-কুশলতা গুণে মহা-কাব্যোচিত কাব্য-বিগ্রহ সৃষ্টি করেছেন।
এ কাব্যের তাৎপর্য রাবণ-চরিত্রের প্রতীকতায়। তার সৃষ্ট রাবণ চরিত্রে পরম দাম্ভিকতা প্রকট হয়ে উঠেনি।
রামায়ণকে তিনি তার মানবতার আলোকে বিধৌত করে যে মহাকাব্য রচনা করে ছিলেন, তা আসলে রোমান্টিক মহাকাব্য।
এ কারণে আকারে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ মহা-কাব্যোচিত হলেও, এর প্রাণ-নন্দিনী সম্পূর্ণ রোমান্টিক এবং মাইকেল মধুসূদন এ কাব্যে জীবনের যে জয়গান করেছেন, তা বীররসের নয়, কারুণ্যের।
কবি তাই, রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, “সমুদ্রতীরের শ্মশানে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া কাব্যের উপসংহার করিয়াছেন।”
ব্যক্তিগত জীবন:
দাম্পত্য জীবন: মাদ্রাজে গিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভের চেয়েও কবি যে বিশেষ কাজটি করে ছিলো তা হচ্ছে এক শ্বেতাঙ্গিনীকে বিয়ে করা।
মাদ্রাজে অবস্থানকালীন সময়ে তিনি রেবেকা ম্যাকটাভিশ নামক এক ইংরেজ যুবতীকে বিয়ে করেন। অরফান আস্যাইলাম স্কুলে পড়াতে শুরু করার পরই পরিচয় হয় তার ভাবী স্ত্রী রেবেকার সাঙ্গে।
বিয়ের এই প্রক্রিয়াটি অবশ্য খুব সহজ ছিলো না।
তার বন্ধু গৌরি দাশকে লিখেছিলো” “রেবেকাকে পেতে খুব ঝামেলা হয়ে ছিলো, বুঝতেই তো পারছো তার (রেবেকা) সমস্ত শুভাকাঙ্ক্ষী এই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলো”” তাদের বিয়ে সম্পাদন হয় ৩১ জুলাই ১৮৪৮ সালে।
বিদেশে গিয়ে রোগ ভোগ করা, চাকরি জোটানো তারপর এই বিদেশিনী কে বিয়ে করা এই সবই হয়ে ছিলো মাদ্রাজ পৌঁছানোর ৬মাসের মধ্যে।
কিন্তু তাদের এই দাম্পত্য জীবন বেশি দিন স্থায়ী ছিলো না। তিনি ভেবেছিলেন বিয়ের পর তার প্রাণের রেবেকাকে সাঙ্গে নিয়ে সুখী হবেন। কিন্তু সুখ জিনিসটা বিধাতা হয়ত তার কপালে লিখেনি।
সংসারের নানা ঝঞ্ঝাট, গোলমাল দেখা দিলো। মাইকেলের এক-গুয়েমির কারণে স্ত্রীর মতের সাঙ্গে অমিল হতে লাগল। এর ফলে তিনি কয়েক বছরের মধ্যেই রেবেকার সাঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেন। রেবেকার গর্ভে মাইকেল মধুসূদনের ২পুত্র ও ২ কন্যার জন্ম হয়।
ব্যক্তিগত জীবন:
মাদ্রাজ জীবনের শেষ পর্বে রেবেকার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় অল্পকাল পরে মধুসূদন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজের কোন এক শিক্ষকের কন্যা হেনিরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিবাহ করেন।
হেনিরিয়েটাও সর্বগুণ সম্পন্ন রুচিমার্জিত মেয়ে ছিলো। হেনিরিয়েটা মাইকেল মধুসূদনের সারা জীবনের সঙ্গিনী ছিলেন।
তাদের নেপোলিয়ান নামক এক ছেলে এবং শর্মিষ্ঠা নাম এক মেয়ে। তার বংশধরদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় লিয়েন্ডার পেজ।
মৃত্যু: মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধিস্মারক, কলকাতা, মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ কস্ট ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়।
আইন পেশাই তিনি তেমন সাফল্য লাভ করতে পারেন নি। তাছাড়া অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য তিনি ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েন।
১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন ( অর্থাভাবে ) অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে কলকাতার সার্কুলার রোডে সমাধি দেয়া হয়।
মহাকবি জীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমির প্রতি তার সুগভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় পংক্তিমালায়। তার সমাধিস্থলে নিচের কবিতাটি লেখা রয়েছে :
“’দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধি স্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী’”
সাহিত্যকর্ম:
বাংলা রচনা: নাটক ও প্রহসন, শর্মিষ্ঠা নাটক (১৮৫৯), একেই কি বলে সভ্যতা? (১৮৬০), বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ (১৮৬০),
পদ্মাবতী নাটক (১৮৬০), কৃষ্ণকুমারী নাটক (১৮৬১),
মায়া-কানন (১৮৭৪), কাব্য, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য (১৮৬০), মেঘনাদবধ কাব্য (১৮৬১), ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬১),
বীরাঙ্গনা কাব্য (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৫), অনুবাদ গ্রন্থ, হেক্টর-বধ (১৮৭১)।
ইংরেজি রচনা: কাব্য: কালেক্টেড পোয়েমস, দি অপ্সরি, আ স্টোরি ফ্রম হিন্দু মিথোলজি, দ্য ক্যাপটিভ লেডি, ভিশনস অফ দ্য পাস্ট।
কাব্যনাট্য:
রিজিয়া: ইমপ্রেস অফ ইন্ডে, অনুবাদ নাটক, রত্নাবলী, শর্মিষ্ঠা, নীল দর্পণ অর দি ইন্ডিগো প্ল্যান্টিং মিরর, প্রবন্ধ সাহিত্য, দি অ্যাংলো-স্যাক্সন অ্যান্ড দ্য হিন্দু, অন পোয়েট্রি এটসেট্রা, অ্যান এসে, অন্যান্য রচনা, আ সাইনপসিস অফ দ্য রুক্মিণী হরণ নাটক।
বহিঃসংযোগ:
- বীরাঙ্গনা কাব্য[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ব্রজাঙ্গনা কাব্য[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য
বাংলার নবজাগরণ:
ব্যক্তিত্ব: অরবিন্দ ঘোষ, রাজনারায়ণ বসু, জগদীশ চন্দ্র বসু, সুভাষচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বিটনউপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী,
মধুসূদন গুপ্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, অক্ষয়কুমার দত্ত, হেনরি ডিরোজিও, আলেকজান্ডার ডাফ,
মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রমেশচন্দ্র দত্ত, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, রাধাকান্ত দেব, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ,
রামগোপাল ঘোষ, অঘোরনাথ গুপ্ত, ডেভিড হেয়ার, কাজী নজরুল ইসলাম, ইউজিন লাফন্ট, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়,
হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রামকৃষ্ণ পরমহংস, গৌরগোবিন্দ রায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়, চৌধুরীরাজা রাম, মোহন রায়, মেঘনাদ সাহা,
অক্ষয়চন্দ্র সরকার, মহেন্দ্রলাল সরকার, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, গিরিশ চন্দ্র সেন, কেশবচন্দ্র সেন, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, সীতানাথ তত্ত্ব, ভূষণব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, রামচন্দ্র বিদ্যা, বাগীশদ্বারকানাথ,
বিদ্যাভূষণ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দ, পরমহংস যোগানন্দ, বেগম রোকেয়ার, জনীনাথ রায়।
সংস্কৃতি:
আদি ব্রাহ্ম সমাজ বাংলা সাহিত্য বাংলা কবিতা বাংলা সঙ্গীত ব্রাহ্ম সমাজ ব্রিটিশ রাজ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন বাংলার ইতিহাস নজরুল
গীতির বীন্দ্র নাট্য নৃত্য রবীন্দ্রসঙ্গীত সংবাদ প্রভাকর বঙ্গে সমাজ তন্ত্র স্বদেশী সত্যাগ্রহ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ঠাকুর পরিবার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ইয়ং বেঙ্গল।
সংগঠন/প্রতিষ্ঠান:
আনন্দ মোহন কলেজ এশিয়াটিক সোসাইটি বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদবঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় বঙ্গবাসী কলেজ বেথুন কলেজ বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং
অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি কলকাতা মাদ্রাসা কলেজ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজফোর্ট উইলিয়াম কলেজ জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন
হিন্দু মহিলা বিদ্যালয় হিন্দু থিয়েটার ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স মেদিনীপুর কলেজ ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন,
বেঙ্গলওরিয়েন্টাল সেমিনারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় রিপন কলেজ সংস্কৃত কলেজ স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা শ্রীরামপুর কলেজসেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ,
কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অন্যান্য নবজাগরণ
ও বিপ্লবী
আন্দোলন:
ভক্তি আন্দোলন গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম ব্রাহ্মবাদ ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন কালীঘাট পটচিত্র যুগান্তর আন্দোলন বেঙ্গল স্কুল অব আর্টহিন্দু-জার্মান
ষড়যন্ত্র কল্লোল গণ নাট্য আন্দোল নব্রতচারী আন্দোলন বাংলা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন সমান্তরাল চলচ্চিত্র ভারতীয় সমাজতন্ত্র নকশা লহাংরি আন্দোলন প্রকল্পনা আন্দোলন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।