কবিতা বাঙালি বরিশাল : কামিনী রায়:
জন্ম : ১২ অক্টোবর ১৮৬৪,বাসণ্ডা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা বাংলাদেশ)
মৃত্যু : ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ (বয়স ৬৮),হাজারীবাগ, বিহার (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্য) ভারত।
ছদ্মনাম : জনৈক বঙ্গমহিলা,
পেশা : কবি, সমাজকর্মী, নারীবাদী লেখিকা,
সময়কাল : বঙ্গীয় নবজাগরণ,
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি : আলো ও ছায়া (১৮৮৯), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩),
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার : জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯২৯),
[ads1]
কামিনী রায় জন্ম: অক্টোবর ১২, ১৮৬৪ মৃত্যুঃ সেপ্টেম্বর ২৭, ১৯৩৩) একজন প্রথিতযশা বাঙালি কবি, সমাজ-কর্মী এবং নারী-বাদী লেখিকা। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ১ম মহিলা স্নাতক ডিগ্রী-ধারী ব্যক্তিত্ব। তিনি একসময় “জনৈক বঙ্গমহিলা” ছদ্মনামে লিখতেন।
জীবনী:
[ads1]
কামিনী রায়ের জন্ম পূর্ব-বঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) বাকেরগঞ্জের বাসণ্ডা গ্রামে (বর্তমানে যা ঝালকাঠি জেলার অংশ)। তার পিতা চণ্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্ম-ধর্মাবলম্বী, বিচারক ও ঐতিহাসিক লেখক ছিলেন। ১৮৭০ খ্রীস্টাব্দে চণ্ডীচরণ ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা লাভ করেন। পরের বছর তার স্ত্রী-কন্যাও কলকাতায় তার কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। তার ভগিনী যামিনী সেন লেডি ডাক্তার হিসাবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন। ১৮৯৪ খ্রীস্টাব্দে কামিনীর সাথে স্টাটুটারি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের বিয়ে হয়।
শিক্ষাজীবন:
[ads1]
কন্যা কামিনী রায়ের প্রাথমিক শিক্ষার ভার চণ্ডীচরণ সেন নিজে গ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়সে তাকে স্কুলে ভর্তি করে বোর্ডিংয়ে প্রেরণ করেন। ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দে এফ.এ বা ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রীস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবন:
[ads1]
স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর ১৮৮৬ সালেই তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষীকার পদে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ঐ কলেজে অধ্যাপনাও করেছিলেন। যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তার অনেক প্রবন্ধেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২-২৩) এর সদস্য ছিলেন।
সাহিত্য:
[ads1]
শৈশবে তার পিতামহ তাকে কবিতা ও স্তোত্র আবৃত্তি করতে শেখাতেন। এ ভাবে খুব কম বয়স থেকেই কামিনী রায় সাহিত্য রচনা শুরু করেন ও কবিত্ব-শক্তির স্ফূরণ ঘটান। তার জননীও তাকে গোপনে বর্ণ-মালা শিক্ষা দিতেন। কারণ তখন কার যুগে হিন্দু পুর-মহিলাগণের লেখাপড় শিক্ষা করাকে একান্তই নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। রচিত কবিতা গুলোতে জীবনের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ-বেদনার সহজ-সরল ও সাবলীল প্রকাশ ঘটেছে। ১৫ বছর বয়সে তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ খ্রীস্টাব্দে। এ গ্রন্থটির ভূমিকা লিখে ছিলেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রথমে এতে গ্রন্থকর্ত্রী হিসেবে কামিনী রায়ের নাম প্রকাশিত হয় নাই। গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে তার কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।’ তার লেখা উল্লেখ-যোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে –
[ads1]
- আলো ও ছায়া, (১৮৮৯),
- নির্মাল্য, (১৮৯১),
- পৌরাণিকী, (১৮৯৭),
- মাল্য ও নির্মাল্য, (১৯১৩),
- অশোক সঙ্গীত, (সনেট সংগ্রহ, ১৯১৪),
- অম্বা (নাট্যকাব্য, ১৯১৫),
- দীপ ও ধূপ, (১৯২৯),
- জীবন পথে, (১৯৩০),
- একলব্য,
- দ্রোণ-ধৃষ্টদ্যুম্ন,
- শ্রাদ্ধিকী,
আড়ো পড়ুন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন কাহিনী
আড়ো পড়ুন: আবুল কাশেম ফজলুল হক জীবনী
[ads1]
অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত মহাশ্বেতা ও পুণ্ডরীক তার ২টি প্রসিদ্ধ দীর্ঘ কবিতা। এছাড়াও, ১৯০৫ সালে তিনি শিশুদের জন্য গুঞ্জন নামের কবিতা সংগ্রহ ও প্রবন্ধ গ্রন্থ বালিকা শিক্ষার আদর্শ রচনা করেন। কামিনী রায় সব সময় অন্য সাহিত্যিকদের উৎসাহ দিতেন। ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দে তিনি বরিশাল সফরের সময় কবি সুফিয়া কামালকে লেখা-লেখিতে মনোনিবেশ করতে বলেন।
তার কবিতা পড়ে বিমোহিত হন সিবিলিয়ান কেদারনাথ রায় এবং তাকে বিয়ে করেন। ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দে কামিনী রায়ের স্বামীর অপঘাতে মৃত্যু ঘটে ছিলো। শোক ও দুঃখ তার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা তার কবিতায় প্রকাশ পায়। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সংস্কৃত সাহিত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ছিলো।
সম্মাননা:
[ads1]
১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কামিনী রায়কে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ প্রদান করে সম্মানিত করেন।
তিনি ১৯৩০ খ্রীস্টাব্দে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ছিরেন।
১৯৩২-৩৩ খ্রীস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদেরও সহ-সভাপতি ছিলেন কামিনী রায়।
মহাপ্রয়াণ:
জীবনের শেষ ভাগে তিনি হাজারীবাগে বাস করেছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৩ খ্রীস্টাব্দে তার জীবনাবসান ঘটে।
বাংলার নবজাগরণ:
ব্যক্তিত্ব:
[ads1]
অরবিন্দ ঘোষ, রাজনারায়ণ বসু, জগদীশ চন্দ্র বসু, সুভাষচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বিটনউপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী, মধুসূদন গুপ্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, অক্ষয়কুমার দত্ত, হেনরি ডিরোজিও, আলেকজান্ডার ডাফ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রমেশচন্দ্র দত্ত, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, রাধাকান্ত দেব, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ, রামগোপাল ঘোষ, অঘোরনাথ গুপ্ত, ডেভিড হেয়ার, কাজী নজরুল ইসলাম, ইউজিন লাফন্ট, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রামকৃষ্ণ পরমহংস, গৌরগোবিন্দ রায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়, চৌধুরী, রাজা রামমোহন রায়, মেঘনাদ সাহা, অক্ষয়চন্দ্র সরকার, মহেন্দ্রলাল সরকার, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, গিরিশ চন্দ্র সেন, কেশবচন্দ্র সেন, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, সীতানাথ তত্ত্ব ভূষণ, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, রামচন্দ্র বিদ্যাবাগী, শদ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্বামী বিবেকানন্দ, পরমহংস যোগানন্দ, বেগম রোকেয়া, রজনীনাথ রায়।
সংস্কৃতি:
[ads1]
আদি ব্রাহ্মসমাজ,বাংলা সাহিত্য, বাংলা কবিতা, বাংলা সঙ্গীত, ব্রাহ্ম সমাজ, ব্রিটিশ রাজ, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান, অ্যাসোসিয়েশন, বাংলার ইতিহাস, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র নাট্য নৃত্য, রবীন্দ্রসঙ্গীত, সংবাদ প্রভাকর, বঙ্গে সমাজ, তন্ত্রস্বদেশী, সত্যা গ্রহত,ত্ত্ববোধিনী, পত্রিকা, ঠাকুর পরিবার, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, ইয়ং বেঙ্গল।
সংগঠন / প্রতিষ্ঠান:
[ads1]
আনন্দমোহন কলেজ, এশিয়াটিক সোসাইটি, বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ, বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়,বঙ্গবাসী কলেজ, বেথুন কলেজ, বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, কলকাতা মাদ্রাসা কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন, হিন্দু মহিলা বিদ্যালয়, হিন্দু থিয়েটার, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স, মেদিনীপুর কলেজন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন, বেঙ্গলওরিয়েন্টাল সেমিনারিপ্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়রিপন কলেজসংস্কৃত কলেজ স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতাশ্রীরামপুর কলেজসেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতাবিদ্যাসাগর কলেজ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অন্যান্য নবজাগরণ ও বিপ্লবী আন্দোলন:
[ads1]
ভক্তি আন্দোলন, গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম, ব্রাহ্মবাদ, ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, কালীঘাট পটচিত্র, যুগান্তর আন্দোলন,বেঙ্গল স্কুল অব আর্ট, হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র, কল্লোল, গণনাট্য আন্দোলন, ব্রতচারী আন্দোলন, বাংলা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন, সমান্তরাল চলচ্চিত্র, ভারতীয় সমাজতন্ত্র, নকশা, লহাংরি আন্দোলন, প্রকল্পনা আন্দোলন।