ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে যে সব খাবার

বর্তমান বিশ্বে সকল দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সাঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।  ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ – বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটায় এরকম প্রধান কারণের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম।

পৃথিবীতে প্রতি ১০- ১৫ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষ মারা যায় এবং প্রতি ১০-১৫ সেকেন্ডে দুইজন ডায়াবেটিস রোগী সনাক্ত করা হয়।

তাই ডায়াবেটিকসের ভয়াবহতা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি।

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ পুরো-পুরি বা সম্পূর্ণ নিরাময় করা যাবে না।

তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবন-যাপন করা যায়।

[ads1]

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার অনেক উপায় রয়েছে।

নিয়মিত ওষধ ও ব্যায়ামসহ নানা ভাবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

তবে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে যদি আপনি খাবার নিয়ন্ত্রণ না করেন।

তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এমন খাদ্য রাখতে হবে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। আর সেটিও হতে হবে মাপ মতো।

চলুন আমরা জেনে নেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, এমন কিছু খাবার সম্পর্কে।

খেজুর: বাদামি বা খয়েরি রঙের সুন্দর একটি ফল খেজুর।

খেজুরের মিষ্টি স্বাদের কারণে অনেকেই ভেবে থাকেন, ডায়াবেটিক রোগীদের এটা খাওয়া ঠিক নয়।

কিন্তু প্রচুর ফাইবারযুক্ত রয়েছে খেজুর আসলে ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ওষুধ হিসেবে কাজ করে খেজুর।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আঙ্গুর, কমলালেবু ও ফুলকপির তুলনায় খেজুর শরীরে অনেক বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জোগান দেয়।

[ads1]

তিসি: এটি একধরনের বীজ, যার ইংরেজি নাম ফ্লেক্সসিড। আমরা এটাকে তিসি হিসেবেই চিনে থাকি।

তিসিবীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই বীজ খুবই কার্যকর।

তিসি বীজ ফাইবার, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস।

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তিসি রাখতে পারেন। এটা রক্তে চিনির মাত্রা কমায়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

তিসিবীজ গুঁড়া করে প্রতিদিন দুই গ্যাস পানিতে তিন চা চামচ মিশিয়ে পান করুন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

[ads1]

দুধ: ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-এর ভালো উৎস দুধ। আর সেজন্য দুধ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য উপকারী খাবার।

অনেকের দুধ খেলে পেটে বায়ু হয়, তাই আপনি চাইলে দুধের ফ্যাটি অংশটি ছাড়া টকদই ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারও খেতে পারেন।

সকালের নাশতায়ও আপনি রাখতে পারেন দুধ অথবা দুগ্ধজাত কোনো খাবার।

তুলসী: ঔষধি গাছ তুলসীকে বলা হয় ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, তুলসীপাতা বিবিধভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়।

চাইলে তুলসীর রস আপনি চায়ের সাথে মিলিয়েও খেতে পারেন।

[ads1]

মটর-শুঁটি : হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে মটর-শুঁটি।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, মটর-শুঁটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২০০ গ্রামের মতো মটরশুঁটি খেলে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্ত-চাপ জনিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যায়।

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় বার মাসই পাওয়া যায় মটর-শুঁকি। যদি না থাকে তবে যখন মটর-শুঁটির মওসুম, তখন বেশি করে কিনে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর বার মাস খাদ্য তালিকায় রাখুন এই সবজি। তেলাকুচা পাতা এবং ফল সবজির মতো খান। মেথি চূর্ণও খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে : বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

[ads1]

এই রোগের হাত ধরে আরো অশংক্ষ রোগ দেহে বাসা বাঁধে থাকে। তাই যতটুকু সম্ভব এ থেকে দূরে থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে বা এই রোগটিকে বিলম্বিত করতে নিজেদের চেষ্টা করতে হবে।

প্রতিদিন কমপক্ষে এক টানা ৪০-৪৬ মিনিট হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।

হাঁটার ক্ষেত্রে এক টানা ৪০-৪৫ মিনিট একটানা হাঁটলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।


আড়ো পড়ুন: কাজী নজরুল ইসলাম জীবনী
আড়ো পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদ আত্মজীবনী

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ যেভাবে

[ads1]

  • এমন ব্যায়াম বা পরিশ্রম করতে হবে, যাতে শরীর থেকে ঘাম ঝরে।
  • হঠাৎ খুব কঠিন ব্যায়াম শুরু না করে প্রথমে ওয়ার্কআপ বা হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে হবে। আস্তে আস্তে গতি বাড়াতে হবে।
  • দেহের ওজন বাড়তে দেয়া হবে না। যাদের ওজন ইতোমধ্যে বেড়েছে, তারা ওজন কমাতে ব্যবস্থা নিন (যেমন-খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম, দৌড়ানো, হাঁটা ইত্যাদি)।
  • প্রতিদিন শাকসবজি রাখুন খাদ্য তালিকায়। আঁশযুক্ত খাবার বেশি খান।
  • কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার, যেমন-ভাত, আলু কম খান।
  • বেশি গরু বা ছাগলের গোশত খাবেন না।
  • আইসক্রিম, পনির, ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কস ও কৃত্রিম জুস এড়িয়ে চলুন।
  • ঘি বা মাখন কম খান বা বাদ দিন।
  • দিনে ৮-১০ গ্যাস পানি পান করুন।
  • ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৬ ঘন্টা ঘুমান।
  • টেনশন কমাতে হবে।
  • চিকিৎসকদের মতে।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

Leave a Comment