উত্তরবঙ্গের একটি বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া জেলা। ১৮২১ সালে এই জেলাটি প্রতিষ্ঠিত হয় বগুড়া জেলায় মোট ১২ টি উপজেলায় রয়েছে এবং উপজেলার সংখ্যা দিক দিয়ে বগুড়াকে “এ ক্যাটাগরি ভুক্ত” জেলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বগুড়া জেলা বিভিন্ন দিক দিয়ে সারাদেশে আলোচিত। বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত তো চলুন জেনে নেই।
বগুড়া জেলা
রাজশাহী বিভাগের অন্যতম বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া জেলা। বগুড়া জেলার আয়তন ২৮৯৮ বর্গ কিলোমিটার। বৃহত্তম এই জেলাটির সাথে একাধারে গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, জামালপুর, নওগাঁ ও নাটোর জেলার সীমান্ত রয়েছে। বগুড়া জেলাকে বলা হয় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার। কেননা উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর ও রংপুর অঞ্চলে যেতে হলে সড়ক এবং রেলপথ উভয় পথে বগুড়া দিয়ে যেতে হয়। এছাড়া শিক্ষা নগরী হিসেবে বগুড়া জেলা সুপরিচিত।
►► সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত?
►► রাজশাহী কিসের জন্য বিখ্যাত?
বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত?
শিল্প, শিক্ষা, ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব এবং আরও নানা দিক দিয়ে বগুড়া জেলা একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। বাংলাদেশের অসংখ্য প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ এই জেলা থেকে উদ্ধার হয়েছে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, যার মধ্যে মহাস্থানগড় রয়েছে, সেটিও বগুড়া জেলায় অবস্থিত। এছাড়া উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে সেরা স্কুল ও কলেজ বগুড়া জেলাতেই অবস্থিত।
বগুড়া জেলার নাম শুনলে প্রথমেই যে জিনিসটির কথা মাথায় আসে সেটি হচ্ছে বগুড়ার বিখ্যাত দই। বগুড়ার বিখ্যাত দই এতোই জনপ্রিয় যে বর্তমানে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় বগুড়ার দই পাওয়া যায়। বগুড়ার দই নাম ব্যবহার করে হাজার হাজার দইয়ের দোকান চোখে পড়বে। এটিই বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত প্রশ্নটির উত্তর।
মহাস্থানগড়ের কথা কেউ শোনেনি এমন লোক হয়তো বাংলাদেশে খুজে পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হচ্ছে বগুড়ার মহাস্থানগড়। মহাস্থানগড়কে ইতিহাসে পুন্ড্রনগর বা পুন্ড্রবর্ধন নামেও উল্লেখ করা হয়েছে। জেনে অবাক হবেন যে, এই মহাস্থানগড়ে একসময় প্রাচীন বাংলার রাজধানী ছিল।
শুধু তাই নয়, পুন্ড্রকে বলা হয় বাংলার সর্বপ্রাচীন সভ্যতা। তৎকালীন পুন্ড্র সভ্যতার রাজধানী ছিল এই পুন্ড্রনগর বা পুন্ড্রবর্ধন, যাকে আমরা বর্তমানে মহাস্থানগড় হিসেবেই জেনে আসছি। ধারণা করা হয়, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে, অর্থাৎ যিশু খ্রিস্টের জন্মের পূর্বে এই সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল।
বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত?
মহাস্থানগড়ের আবিষ্কার ইংরেজ আমলে করা হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহাম মহাস্থানগড় আবিষ্কার করেন। এরপর থেকে মহাস্থানগড় নিয়ে অনেক প্রত্নবিদ গবেষণা করেছেন। মহাস্থানগড়ের আশেপাশে আরও অনেক প্রত্নস্থল পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে খোদার পাথর ভিটা, বৈরাগীর ভিটা, শীলাদেবীর ঘাট, বেহুলার বাসর ঘর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
বগুড়া জেলাকে শিক্ষা নগরী বলা হয় মূলত বগুড়া জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মেডিকেল কলেজের সুনামের জন্য। উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে স্বীকৃত প্রাপ্ত আজিজুল হক সরকারি কলেজ বগুড়া জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এছাড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এবং বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ সুনামের সাথে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত প্রশ্নটির বিকল্প উত্তর হিসেবে ধরা যেতে পারে।
কৃষিক্ষেত্র বগুড়া জেলা অনেক প্রসিদ্ধ। বগুড়ায় নানা রকম মসলা উৎপাদন হয়ে থাকে। যার কারণে বাংলাদেশ সরকার বগুড়া জেলাতে মসলা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। প্রতিবছর মসলা গবেষণা কেন্দ্রে হতে মসলা বিষয়ে নানা রকম গবেষণা হচ্ছে।
বগুড়া জেলা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়ার সুবিধার্থে এ জেলার সড়কগুলো অন্যান্য জেলা হতে অত্যন্ত উন্নত এবং প্রশস্থ। এছাড়া বাংলাদেশের পাঁচটি বৃহত্তম রেলওয়ে জংশনগুলোর মধ্যে একটি বগুড়া জেলায় অবস্থিত। সান্তাহার রেলওয়ে জংশন হতে প্রতিনিয়ত দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা গামী ট্রেনগুলো আসা যাওয়া করে। বগুড়া জেলার নদ-নদীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত একটি জেলা। বগুড়া শহর বিখ্যাত করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এছাড়া বাঙালি নামে একটি সুপরিচিত নদী এই জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
►► যশোর কিসের জন্য বিখ্যাত
►► রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত?
বগুড়া জেলা নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন: বগুড়া কিসের জন্য বিখ্যাত?
উত্তর: দইয়ের জন্য বিখ্যাত
প্রশ্ন: মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি কোন জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলায়
প্রশ্ন: বাংলাদেশের মসলা গবেষণা কেন্দ্র কোন জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলায়
প্রশ্ন: বগুড়া জেলা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তর: করতোয়া নদীর তীরে
প্রশ্ন: মহাস্থানগড় কোন নদীর পাশে অবস্থিত নদীর পাশে অবস্থিত?
উত্তর: করতোয়া নদীর তীরে
প্রশ্ন: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয় কোন জেলাকে?
উত্তর: বগুড়া জেলাকে
প্রশ্ন: বাঙালি নদী কোন জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলায়
প্রশ্ন: প্রাচীন মহাস্থানগড় নিদর্শনটি কোন ব্যক্তি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন?
উত্তর: ব্রিটিশ প্রত্নবিদ আলেক্সান্ডার কানিংহাম
প্রশ্ন: খোদার পাথর ভিটা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে
প্রশ্ন: বৈরাগীর ভিটা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে
প্রশ্ন: শীলাদেবীর ঘাট কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে
প্রশ্ন: বেহুলার বাসর ঘর কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে
প্রশ্ন: সান্তাহার রেলওয়ে জংশন কোন জেলায়?
উত্তর: বগুড়া জেলায়
প্রশ্ন: ২০১৮ সালে পরিবর্তিত হওয়া বগুড়া জেলার ইংরেজি বানান কোনটি?
উত্তর: Bogura
প্রশ্ন: বগুড়া জেলায় মোট কয়টি সংসদীয় আসন রয়েছে?
উত্তর: ৭ টি আসন রয়েছে