শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে দায়ী পরিবার : মাদক! আমরা জানি মাদক একটি মরণ নেশা। বড় বড় সেমিনার কিংবা আলোচনা সভায় বলি “মাদক কে না বলুন” মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হবে। মাদকের অবাধ বিস্তার প্রতিরোধে সরকারসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। তারপরও দিন দিন মাদকাসক্ত ব্যক্তি, পরিবারের সংখ্যা কমার থেকে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ-র প্রধান কারন হচ্ছে মাদকের সহজলভ্যতা। এখন শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় মাদক খুব সহজেই পাওয়া যায়।
এসব মাদকের জন্য যুবক -যুবতীরা ও কিশোর – কিশোরীরা চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পরেছে। বাংলাদেশে মাদক হিসেবে মদ, গাঁজা, হিরোইন এবং আফিমের কথা শোনা গেলেও, বর্তমানে মাদকসেবিদের একটা বড় অংশ হচ্ছে ইয়াবা আসক্ত। তবে একটি শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার পিছনে সব থেকে বড় দায়টা থাকে তার পরিবারের। একটা শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পারিবারিক অসচেতনতা এবং একাকিত্ত্বতা।
শিশু কিশোরদের বন্ধু বান্ধব নির্বাচন, তারপর তারা কাদের সাথে মেলামেশা করে, কোন পরিবেশে বেড়ে উঠছে এসব দেখার দায়দায়িত্ব হচ্ছে পরিবারের। পরিবারের নিঃসঙ্গতাও একটি শিশুকে অপরাধের জগতের দিকে ঠেলে দেয়। নিঃসঙ্গতার কারনে শিশু কিশোররা বাজে সঙ্গ বেছে নিতে শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে তারা মাদককের দিকে ঝুকে পড়ে। তখন আর পরিবারের কিছু করার থাকে না। এভাবে পারিবারিক ঝগড়াঝাটিসহ বিভিন্ন কারনে শিশু কিশোরা মাদকের কবলে হারি যায়।
শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে দায়ী পরিবার
- সাধারণত প্রথম দিকে একটি শিশু সিগারেট খাওয়া শুরু করে।
- এরপর বন্ধু বান্ধবদের কথা শুনে কৌতুহল বসত গাঁজা, মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশা সামগ্রী সেবন করে।
- তারপর আস্তে আস্তে নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলে নিজের জগতে।
- এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য শিশু কিশোরদের জীবন! অসংখ্য পরিবার প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে তাদের আদরের প্রিয়ো সন্তানদের।
- একটা মাদকাসক্ত পরিবারই বুঝতে পারে তাদের প্রিয়ো সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা কতো ভয়াবহ এবং কষ্টের।
- এছাড়াও সামাজিকভাবে ঐ পরিবারকে সহ্য করতে হয়ে অনেক কটুকথা।
- অনেক সময় এসব কথা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয় কেউ কেউ।
- মাদকাসক্ত থেকে খুব কম লোক সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) টেবিলের ৬(গ) / ৭(গ) / ৮(গ) / ৯(গ) / ১০(গ) ধারাগুলোতে সর্বোচ্চ সাজার পরিমান দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদন্ড/ যাবজ্জীবন।
- ২০০০ পিচ এর উর্ধে ইয়াবা বহন/পরিবহন/স্থানান্তর/আমদানি/রপ্তানির ক্ষেত্রে সাজার পরিমান হচ্ছে মৃত্যুদন্ড/ যাবজ্জীবন।
- ২৫ গ্রামের উর্ধে কোকেন, হেরোইন, আফিম বহন/পরিবহন/স্থানান্তর/আমদানি/রপ্তানির ক্ষেত্রে সাজার পরিমান হচ্ছে মৃত্যুদন্ড/ যাবজ্জীবন।
শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে দায়ী পরিবার
আরো পড়ুন: শরীরের সুন্দর আকৃতির জন্য মেথির গুনাগুন
আরো পড়ুন: বিশ্বের ৯টি ঐতিহাসিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এতো কঠোর করার পরও মাদক বিক্রি ও সেবনকারীর সংখ্যা কমছে না বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে। প্রতিদিন আমাদের সুস্থ সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য যুবক, যুবতী, কিশোর কিশোরীরা মরণ নেশা মাদকের কবলে পড়ে । এসব যুবক/যুবতী ও কিশোর কিশোরীদের মরণ নেশা মাদকের কবল থেকে মুক্ত করা না গেলে সমাজ একসময় হয়ে উঠবে অপরাধের অভয়ারণ্যে।
- এসব মরণ নেশা মাদকের বিস্তার ঠেকাতে দরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সামজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা
- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট গুলোতে আরও কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা।
- যাতে করে কোন অবস্থায় মাদকের বিস্তার লাভ করতে না পারে।
- মাদক মুক্ত সমাজই পারে অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে।