সর্দি-কাশি হলে অনেকেরই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। আবার বর্তমানে করোনাকালীন প্রায় সব রোগীর মুখেই শোনা যায় শ্বাসকষ্টের কথা। শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী?
বিভিন্ন কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। মূলত সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, হৃদরোগের কারণ, পেটের সমস্যা, গ্যাস ও হজমের সমস্যা, অ্যালার্জি, হাঁপানি, রক্তস্বল্পতা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং টেনশনে থাকলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটির জন্য দায়ী ফুসফুসের সমস্যা।
কিছু অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আবার অস্থায়ীভাবেও শ্বাসকষ্টে সমস্যা থাকতে পারে।
অনেক সময় নাকে ধুলাবালি ঢোকার কারণেও মাঝেমধ্যে হালকা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এমনটি হলে খুব সহজে বাড়িতেই তা ম্যানেজ করা যেতে পারে।
কিন্তু নিয়মিতভাবে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে অথবা অনেক বেশি পরিমাণে সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। (এটি অত্যন্ত ভয়াবহ একটি রোগ এটি নিয়ে কেউ বসে থাকবেন না)
শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী?
রোগীকে শুয়ে পড়তে দেবেন না। তাঁকে কোমর থেকে তুলে ধরুন।
সোজা হয়ে বসতে বলুন ও আশ্বস্ত করুন যে কিছুই হয়নি, আতঙ্কের কিছু নেই।
রোগীকে না জানিয়ে ডাক্তারকে ফোন করবেন। ডাক্তারি পরামর্শে উপশমকারী inhaler spacer-র সাহায্য নিতে হবে।
এতে ধীরে ধীরে পাঁচবার টান নিতে বলুন। যদি সেরকম হাতের কাছে কিছু না থাকে, এক্ষেত্রে কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারেন। তাতে জোরে ফুঁ দিয়ে, টানতে বলুন।
spacer-র মধ্যে প্রতিবার এক চাপ দিয়ে তা থেকে পাঁচবার শ্বাস নিতে হবে।
ওষুধ ঠিকমতো টেনে নিতে পারছেন কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।
রক্তচাপ মেপে দেখুন। যদি রক্তচাপ বেড়ে যায়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে তাঁকে প্রেসার ও ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিন।
এর মাঝে অল্প অল্প করে স্যালাইন জল দিন। তবে খেয়াল রাখবেন তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি।
শীতের সময় পানি কম খাওয়া হয় তাই ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়।
আবার যাদের আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা আছে তাদের ঠিক একই কারণে রোগের প্রকোপ বাড়ে।
দেখা যায়, এমনিতে যারা সারাবছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে না, তাদেরও কাউকে কাউকে শীতকাল ও শুষ্ক মৌসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শ্বাসকষ্ট হলে হাঁপানি ভেবে নানা ধরনের ওষুধ না খেয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নিতে হবে। ধূমপান বর্জন করুন। ধুলাবালু ও দূষণ থেকে দূরে থাকুন।
সতর্কতাঃ
আমরা অনেকেই আছি শ্বাসকষ্ট হলে হাঁপানি ভেবে নানা ধরনের ওষুধ খাইয়ে থাকে যা রোগীর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
শ্বাসকষ্টের পেলে অথবা লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তাকে চিকিৎসা প্রদান করা উচিত।
শ্বাসকষ্ট একটি কষ্টদায়ক রোগ, রবিকে খোলা বাতাস অথবা মনোরম পরিবেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে রোগীর ফুসফুস এবং মন ফ্রেশ থাকবে।
তাৎক্ষণিকভাবে শ্বাসকষ্টের আবাস অথবা লক্ষণ বোঝা গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করুন।
অনেক সময় শ্বাসকষ্ট বংশধারা হয়ে থাকে তাই এটি সমন্বয় এবং প্রতিরোধের জন্য ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
শ্বাসকষ্ট রোগীদের ঠান্ডা অতিরিক্ত পানি দিয়ে গোসল করা এবং মাটির নিচে হওয়া তরকারি খাওয়া থেকে বিরত রাখুন।