স্ট্রোক হলে করণীয় কি আমাদের তা জানুন। বর্তমান সময়ের জীবন যাপনে যে রোগগুলোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বেড়ে গেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো স্ট্রোক। আকস্মিক মৃত্যুর পিছনেও স্ট্রোকের অবদান অনেকটাই।
তবে স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, অনেক ক্ষেত্রেই কোনো রকম লক্ষণ টের পাওয়া যায় না।
স্ট্রোক একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এবং দ্রুত এর চিকিৎসা শুরু করা না গেলে রোগীকে পঙ্গুত্ব বরণের পাশাপাশি তার মৃত্যু পর্যন্ত পর্যন্ত হতে পারে।
[ads1]
অন্যদিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া গেলে রোগীর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্ট্রোক হলে তা আমরা বুঝতে পারি না এবং বুঝতে না পারার ফলে দ্বিতীয়বার স্ট্রোক হওয়াতে সেই রোগীকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হতে পারে।
►► হাঁপানী বা অ্যাজমা রোগের সমাধান
►► রমজানে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় কি?
কেন স্ট্রোক হয়?
সাধারণত কিছু ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাই-প্রেসার, হাই-কোলেস্টেরল, ধূমপান, পারিবারিক স্ট্রোকের ইতিহাস, হার্টের অসুখ
যেমন- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, রক্তজমাট বাঁধা অসুখ, ক্যান্সার ইত্যাদি আরও অনেক কারণ রয়েছে স্ট্রোকের।
[ads1]
আবার অনেক সময় কোনো পূর্ব রোগ ছাড়াও হঠাৎ করেই হতে পারে স্ট্রোক।
এক্ষেত্রে হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া, জন্মগত রক্তনালির গঠনগত সমস্যা, জন্মগত এনজাইমের সমস্যা, মেটাবলিক সমস্যা ইত্যাদি রয়েছে।
তাই শুধু বয়স্কদের নয়, একেবারে তরুণদের মধ্যেও স্ট্রোক হতে দেখা যায়।
স্ট্রোক কিভাবে বুঝবেন?
[ads1]
মাঝে মাঝে স্ট্রোকের উপসর্গ শনাক্ত করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের অজ্ঞতার কারণেই নেমে আসে যাবতীয় দুর্যোগ।
স্ট্রোকের শিকার রোগীর যখন ভয়ানক রকম ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, পাশে দাঁড়ানো প্রিয়জনটিই হয়তো বুঝতে পারছে না, কী অপেক্ষা করছে তাদের কাছের মানুষের জীবনে।
সহজ উপায়ে স্ট্রোক শনাক্ত করার উপায়, সহজ তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন
S : Smile. রোগীকে হাসতে বলুন।
T : Talk. রোগীকে আপনার সঙ্গে সঙ্গে একটি বাক্য বলতে বলুন। উদাহরণ- আজকের দিনটা অনেক সুন্দর।
R : Raise hands. রোগীকে একসঙ্গে দুইহাত উপরে তুলতে বলুন।
[ads1]
এর কোনো একটিতে যদি রোগীর সমস্যা বা কষ্ট হয়, তৎক্ষণাৎ দেরি না করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এবং চিকিৎসককে সমস্যাটি খুলে বলুন। (রোগী বলতে স্ট্রোকের শিকার সন্দেহ করা ব্যক্তি বোঝানো হয়েছে)
শনাক্তকরণের আরেকটি উপায় হচ্ছে, রোগীকে বলুন তার জিহবা বের করতে।
যদি তা ভাঁজ হয়ে থাকে অথবা যদি তা বেঁকে যে কোনো একদিকে চলে যায়, সেটাও স্ট্রোকের লক্ষণ। তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
►► দাঁতের মাড়িতে ঘা এর ঔষধ
►► উত্তেজক ট্যাবলেট এর নাম নাম
[ads1]
স্ট্রোকের লক্ষণ কী?
- শরীরের কোনো একদিকে দুর্বলতাবোধ করা বা নাড়াতে না পারা
- হাত-পা অবশ অবশ ভাব
- মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া
- প্রচণ্ড মাথাব্যথা
- কথা অস্পষ্ট হওয়া
- বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব
- দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
- মুখের অসাড়তা, কথা জড়িয়ে যাওয়া
- বেসামাল হাঁটাচলা
- হঠাৎ খিঁচুনি বা ধপ করে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হওয়া ইত্যাদি।
স্ট্রোক হলে করণীয়
[ads1]
- জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে।
- সম্ভব হলে মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করে স্ট্রোকের ধরন বুঝতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোক দুই ধরনের হয়।
- মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার জন্য অথবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য এবং যার চিকিৎসাপদ্ধতিও ভিন্নতর।
- রোগীকে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এ অবস্থায় কোনো খাবার বা ওষুধ মুখে দেওয়া যাবে না। কারণ এগুলো শ্বাসনালিতে ঢুকে আরো ক্ষতি করতে পারে।
- মুখে জমে থাকা লালা, বমি পরিষ্কার করে দিতে হবে।
- গায়ে থাকা জামা-কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে।
- রোগীকে অতি দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে হবে এবং হাসপাতালে যাওয়ার সময় খেয়াল করে রোগীর আগের চিকিৎসার ফাইলপত্র নিতে হবে।
জরুরি চিকিৎসা (অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে)
[ads1]
- শ্বাসনালি, শ্বাসপ্রশ্বাস ও রক্তসঞ্চালন নিয়মিত রাখা।
- রোগীকে একদিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে।
- চোখের যত্ন নিতে হবে।
- মূত্রথলির যত্ন (প্রয়োজনে ক্যাথেটার দিতে হবে)।
- খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্ট্রোকের সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না।
তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি, রোগী অজ্ঞান হলে বা স্ট্রোকের সঙ্গে অন্যান্য রোগ (যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি) থাকলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন।
চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো, কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরবর্তী সময়ে যেন স্ট্রোক না হয়, তার ব্যবস্থা করা।
কিছু কথা মাথায় রাখতে হবে এই সময়ে
[ads1]
যদি কোনো লক্ষণ চোখে পড়ে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্যেই স্ট্রোক হয়।
তাই কোনো লক্ষণ দেখা দিলে, তা নিজে থেকেই সেরে যাবে ভেবে কখনও অপেক্ষা করবেন না।
যদি মনে হয় কারও স্ট্রোক হচ্ছে, তা হলে দেখুন তিনি ঠিক করে হাসতে পারছেন কি না, কোনো বাক্য শুনে তা বলতে পারছেন কি না, দুই হাত ঠিক করে তুলতে পারছেন কি না।
এগুলোর কোনো কিছুই যদি না পারেন, তা হলে তখনই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
►► থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
►► মধু খাওয়ার উপকারিতা ২০টি
স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়
[ads1]
স্ট্রোক অনেকাংশেই প্রতিরোধযোগ্য। স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।
যেমন: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার করা, রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, শারীরিক ব্যায়াম নিয়মিত করা, ওজন ঠিক রাখা, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি ও সতেজ ফলমূল খাওয়া।
চিকিৎসা করলে ৩০ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয় আর ৩০ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে থাকে।
সাধারণত চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের স্ট্রোক বেশি হয়। তবে কম বয়সেও স্ট্রোক হতে পারে।
আমাদের শেষ কথা
[ads1]
ছোট-বড় স্ট্রোক একটা সময় আপনাকে হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই উপড়ে স্ট্রোক হলে করণীয় কী? যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে, তার কোন একটি আপনার মধ্যে প্রতিফলন ঘটছে অথবা আপনার পাড়া প্রতিবেশি কিংবা ফ্যামিলির কারও মধ্যে প্রতিফলন করলে যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকতে হলে সব ধরনের রোগকে পাইরুটি দিতে হবে সব ধরনের রোগ গুলোকে নিয়ে গবেষণা করতে হবে এবং সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিভিন্ন সময় দলের মানুষ রয়েছেন যারা নিজেদের অলসতার কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
উপরে আলোচনা করা হয়েছে স্ট্রোক হওয়ার লক্ষণ গুলো এবং স্ট্রোক হলে করণীয় কী? সেগুলো যদি কারো মধ্যে প্রতিফলন ঘটে তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।