হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্ষিপ্ত জীবনী

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্ষিপ্ত জীবনী


জন্ম: ১৭ এপ্রিল, ১৮৩৮, গুলিটা, রাজবল্লভ-হাট গ্রাম, হুগলী
মৃত্যু: ২৪ মে, ১৯০৩, খিদিরপুর, কলকাতা
পেশা: কবি,

পরিচিতির কারণ: বাঙালি কবি,

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৭ এপ্রিল, ১৮৩৮সনে ২৪ মে, ১৯০৩) হিন্দু কলেজের ছাত্র এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক।

মধুসূদনের পরবর্তী কাব্য রচয়িতাদের মধ্যে তিনি সে সময় সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলো।

বাংলা মহা-কাব্যের ধারায় হেমচন্দ্রের বিশেষ দান হচ্ছে স্বদেশ প্রেমের উত্তেজনা সঞ্চার।

পরিচ্ছেদ সমূহ:


১. জন্ম ও শৈশব
২. কর্মজীবন
৩. কবিতা চর্চা
৪. খণ্ড কবিতা
৫. মৃত্যু

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্ষিপ্ত জীবনী জন্ম ও শৈশব:

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈতৃক নিবাস ছিলো হুগলীর উত্তরপাড়া গ্রামে। রাজবলহাটের নিকট গুলাটিয়া গ্রামে কুলীন ঘরে জন্ম হয় তার।

৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে সর্বজ্যৈষ্ঠ। পিতা কৈলাসচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলো অতিশয় দরিদ্র।

কৌলীন্যের বলে কৈলাসচন্দ্র গুলিটা, রাজবল্লভহাট গ্রাম নিবাসী কলকাতা আদালতের মোক্তার রাজ-চন্দ্র চক্রবর্তীর একমাত্র সন্তান আনন্দময়ীকে বিবাহ করে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।

কৈলাসচন্দ্র বিশেষ কোনো কাজকর্ম করতেন না। তিনি বিধায় শ্বশুরের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ছিলো।

হেম-চন্দ্র যখন কলকাতার খিদির-পুর বাঙ্গালা স্কুলে পড়তেন তখন রাজ-চন্দ্র চক্রবর্তী মৃত্যু মুখে পতিত হন। এর ফলে আর্থিক সংকটে পড়ে হেমচন্দ্রের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।

অতঃপর কলকাতা সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী মহাশয় হেমচন্দ্রকে ১৮৫৩ সালে কলকাতার হিন্দু কলেজে সিনিয়র স্কুল বিভাগের ২য় শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়।

জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় ২য় স্থান অধিকার করে মাসিক ১০টাকা বৃত্তি লাভ করেন ১৮৫৫ সালে।

একই বছর কলকাতার ভবানী-পুর নিবাসী কালী-নাথ মুখো-পাধ্যায়ের কন্যা কামিনী দেবীর সংগে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।

১৮৫৭ সালে সিনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় ৪ স্থান অধিকার করে ২বছরের জন্য মাসিক ২৫ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ৪র্থ বার্ষিক শ্রেণিতে পাঠকালে বৃত্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে লেখাপড়া ত্যাগ করেন।


আড়ো পড়ুন: আবদুল হাই শিকদার জীবনী
আড়ো পড়ুন: আবু হাসান শাহরিয়ার জীবনী


কর্মজীবন:

১৮৫৯ সালে হেমচন্দ্র মিলিটারি অডিট অফিসে কেরানী পদে চাকরি লাভ করেন।

পরে ক্যালকাটা ট্রেনিং একাডেমীর প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন।

১৮৬১ সালে এল. এল. ডিগ্রি অর্জন করেন পরে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন এবং ১৮৬২ সালে মুন্সেফ পদ পান এবং সেখিনে যোগদান করেন।

কয়েক মাস পরে তিনি পুনরায় হাইকোর্টে ওকালতি পেশায় ফিরে এসে ১৮৬৬ সালে বি.এল. পাস করেন। এপ্রিল ১৮৯০ সালে সরকারি উকিল হিসেবে নিযুক্ত হন।

কবিতা চর্চা:

হেমচন্দ্রের প্রধান পরিচয় তিনি একজন দেশ-প্রেমিক যশস্বী কবি। তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ রচনা বৃত্রসংহার কাব্য (১৮৭৫ থেকে ৭৭ দুই খণ্ড) এই কাব্য-গ্রন্থে তিনি পৌরাণিক কাহিনীর সাহায্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আহ্বান জানিয়ে ছিলো।

জুলাই ১৮৭২ এর এডুকেশন গেজেট পত্রিকায় তার ‘ভারত সঙ্গীত’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন এবং সম্পাদক ভূদেব মুখো-পাধ্যায়কেও সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।

এই কবিতায় স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষভাবে ভারতবাসীকে অধীনতার পাশ থেকে মুক্ত হবার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রকৃত পক্ষে তিনিই ১ম জাতীয় কবি যিনি সমগ্র স্বাধীন ভারতের এক সংহতি-পূর্ণ চিত্র দেখে ছিলো।

হেমচন্দ্রের ১ম কাব্য চিন্তাতরঙ্গিনী (১৮৬১)। বৃত্রসংহার মহাকাব্য এবং কবির শ্রেষ্ঠ রচনা। এছাড়াও আছে–

প্রথম কাব্য:

চিন্তাতরঙ্গিনী (১৮৬১), বীরবাহু (১৮৬৪), আশাকানন (১৮৭৬), সাঙ্গরূপক কাব্য, ছায়াময়ী (১৮৮০), বিবিধ কবিতা (১৩০০), বৃত্রসংহার (১৮৭৫), দশ মহাবিদ্যা(১৮৮২),

খণ্ড কবিতা:

জীবন সঙ্গীত, ভারত সঙ্গীত, ভারত বিলাপ, গঙ্গার উৎপত্তি, পদ্মের মৃণাল, ভারত কাহিনী, অশোকতরু।

কুলিন কন্যাগণের আক্ষেপ

মৃত্যু:


কলকাতার খিদিরপুরে ২৪ মে, ১৯০৩ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

Leave a Comment