নিমপাতার গুনাগুন ও উপকারিতা অনেক বেশি। চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক নিমপাতার গুনাগুন ও উপকারিতা কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত। নিম পাতা প্রায় সবার কাছে পরিচিত। বিশেষ করে গ্রাম-বাংলায় নিম গাছ বেশি দেখা যায়। ভেষজ চিকিৎসায় নিম পাতার ব্যবহার বহুল।
নিম গাছের ভয়ে এইডস্ কাঁপে’ – হ্যাঁ কথাটি ঠিকই পড়ছেন, নিম পাতা এইডস্ এর ভাইরাসকে মেরে ফেলতে অনেক সাহায্য করে থাকে।
যদি বাড়িতে একটি নিমগাছ থাকে একজন ডাক্তারের চেয়ে ও বেশী কাজ করে।
[ads1]
নিম (বৈজ্ঞানিক নাম: AZADIRACHTA INDICA) ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস, ফুল, ফল, তেল, বাকল, শিকড় সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। আকৃতিতে ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কান্ড ২০-৩০ ইঞ্চি ব্যাস হতে পারে।
বাংলাদেশের সর্বত্র দেখা গেলেও উত্তরাঞ্চলে নিম বেশি পাওয়া যায়। বলা হয় এর আদি নিবাস বাংলাদেশ, ভারত আর মিয়ানমারে।
►► হাঁপানী বা অ্যাজমা রোগের সমাধান
►► রমজানে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় কি?
এ গাছটি বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান সৌদি আরবে জন্মে।
বর্তমানে এ উপমহাদেশেসহ উষ্ণ ও আর্দ্র অঞ্চলীয় সবদেশেই নিমগাছের বিভিন্ন প্রজাতি ছড়িয়ে আছে।
সৌদি আরবের আরাফাত ময়দানে বাংলাদেশের নিম গাছের হাজার লাখো সংখ্যা আমাদের গর্বিত করে।
[ads1]
কেননা এত দূরে বাংলাদেশের নিম সারি সারিভাবে দাঁড়িয়ে জানান দেয় বাংলার ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক হয়ে।
বলা হয় কেউ যদি নিমতলে বিশ্রাম নেয় কিংবা শুয়ে ঘুমায় তাহলে তার বিমার কমে যায় সুস্থ থাকে মনেপ্রাণে শরীরে অধিকতর স্বস্তি আসে।
এজন্য ঘরের আশপাশে দু-চারটি নিমের গাছ লাগিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়।
[ads1]
নিমপাতার ঔষধি গুণাগুণ
উপমহাদেশের সুপরিচিত নাম নিম বসন্ত ও বায়ু শোধনকারী হিসেবে দুনিয়া সেরা। পূর্ব আফ্রিকায় এ গাছ মৌরোবিইনি নামে পরিচিত।
কেননা এ গাছ দিয়ে অনেক রোগের উপশম হয়। রক্ত পরিষ্কারক, জীবাণুনাশক, চর্মরোগ, ব্রন, কৃমি ও ক্ষত আরও কত ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ দেয়।
শরীরে জ্বলাপোড়া, এলার্জি ও মুখের দুর্গন্ধনাশক। দাঁতের রক্তপড়া বন্ধ করে এবং দাঁতের মাঢ়ি সবল করে। তাছাড়া জন্ডিস প্রশমক।
নিম দিয়ে অন্তত ৫০টি রোগ সারানো যায় বলে শতাব্দীর ইতিহাস সাক্ষী দেয়।
[ads1]
কিছু উল্লেখযোগ্য নিমপাতার গুনাগুন
রক্ত পরিস্কার ও চর্ম রোগ
নিমপাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তচলাচল বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও নিমের জুড়ি নেই। কাঁচা নিম পাতা ১০ গ্রাম ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ (এক) কাপ অবশিষ্ট থাকতে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিযে পান করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্তনে থাকবে।
উল্লেখিত নিয়মে প্রতিদিন ২-৩ বার, নিয়মিত ১-২ মাস পান করে যেতে হবে।
দাঁতের যত্ন
কচি নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ভাল থাকে। নিম পাউডার দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ও মাঁড়ি ভাল থাকে।
[ads1]
নিম পাতার রস পানিতে মিশিয়ে বা নিম দিয়ে মুখ আলতোভাবে ধুয়ে ফেললে দাঁতের আক্রমণ, দাঁতের পচন, রক্তপাত ও মাড়ির ব্যথা কমে যায়।
স্বপ্নদোষ দূর করতে
নিম ছালের রস ১-২ চা চামচ ১ (এক) গ্লাস পরিমাণ গরুর দুধে মিশিয়ে রাত্রে ঘুমানোর সময় খেলে স্বপ্নদোষ চলে যাবে।
[ads1]
ব্রণ দূর করতে
নিমপাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিমপাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত।
নিম পাতা পেষ্ট করে মধুর সাথে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ব্রণ সেরে যায়।
►► দাঁতের মাড়িতে ঘা এর ঔষধ
►► উত্তেজক ট্যাবলেট এর নাম নাম
স্কিন টোনার হিসেবে
[ads1]
নিমপাতা স্কিন টোনার হিসেবেও ব্যাবহার করা যায়। প্রতিরাতে তুলার নরম বল নিমপাতা সেদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে মুখে লাগাতে হবে।
এতে ব্রণ, ক্ষত চিহ্ন, মুখের কালো দাগ দূর হবে। একইভাবে চুলে ব্যাবহার করলে খুশকি এবং অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হবে।
ফেসপ্যাক তৈরিতে
১০টি নিমপাতা ও একটি ছোট কমলা খোসা ছাড়িয়ে অল্প পরিমাণ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। উপকরণগুলো মসৃণ করে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
অল্প পরিমাণ মধু ও দুধ পেস্টে মেশাতে হবে। ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে তিনবার ব্যাবহার করা যাবে।
[ads1]
এটি ত্বকের ব্রুণ, কালো দাগ, চেহারায় ক্ষতের গর্ত দূর করবে। মধু এবং নিম উন্নতমানের ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে
নিম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিস্ময়কর কাজ করে। নিম পাতার রক্তের সুগার লেভেল কমতে সহায়তা করে। পাশাপাশি রক্ত নালীকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করে।
সকালে খালি পেটে গোলমরিচ ও নিম পাতা পেস্ট করে খেলে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।
চুল
উজ্জ্বল,সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন চুল পেতে নিম পাতার অবদান অপরিসীম। চুলের খুসকি দূর করতে নিম পাতার রস খুবই কার্যকারী।
[ads1]
সপ্তাহে ১ দিন নিমপাতা ভালো করে বেটে চুলে লাগিয়ে ঘণ্টার খানিক রাখুন।
এবার ঘন্টা খানিক পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। ফলে চুল পড়া কমার পাশাপাশি চুল নরম ও কোমল হবে। চুলে আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।
নিমের বিভিন্ন অংশের উপকারি দিক:
►► থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
►► মধু খাওয়ার উপকারিতা ২০টি
পাতা
নিম পাতার যে উপকারি তা আমরা কমবেশি সবাই জানি। নিম পাতার অসাধারণ ও জাদুকারী সব গুণ রয়েছে।
পাশাপাশি পাতা, ফল, ছাল, বীজ ইত্যাদি এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়।
[ads1]
নিম গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বিশ্বে নিমের কদর কারণ অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
ছাল
নিমের ছালে Immunomodulatory Polysaccharide Compound আছে – যা শরীরের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সহায়তা করে৷ ফলে অর্থাক্রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা বাড়বে৷
নিমের তেল
নিম তেলটির চড়া গন্ধ৷ নিমের তেল লাল রঙের হয়। এতে ট্রাইগ্লিসারাইড, ট্রাইটারপিনয়েড ইত্যাদি যৌগ আছে৷ কীটনাশক এমনই এক যৌগ৷ এতে এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড আছে৷
চামড়ার প্রদাহ কমাতে নিমতেল খুবই কাজে লাগে৷ নিমতেল গর্ভনিরোধন হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷
[ads1]
নিম চা
অর্ধেক কাপ তাজা নিমপাতার উপর ফোটানো গরম জল ঢেলে নিন৷ মাএ ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন৷ তারপর ভালোভাবে ছেঁকে নিন৷ ধীরে ধীরে সেই জল পান করুন৷
এতে জ্বর-সর্দি কমবে, রক্তের সুগার মাএা কমবে৷
►► স্ট্রোক হলে করণীয় কী?
►► রমজানে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় কি?
শেষ কথা
[ads1]
নিমপাতার গুনাগুন অনেক অনেক বেশি যা বলে বোঝানো সম্ভব নয় এবং এ বিষয়ে গুগল এবং ইউটিউবে লক্ষ লক্ষ কনটেন্ট রয়েছে।
নিমপাতার গুনাগুন বলে শেষ করা একটা আর্টিকেল এর মধ্যে খুবই কষ্টকর হয়ে যায় তাই সীমিত কিছু গুণাগুণ আপনাদের সামনে আলোচনা করা হলো।
ঘরের দক্ষিণ পাশে অথবা বাড়ির এরিয়ার মধ্যে নিমগাছ থাকা অনেক বেশি ভালো একটি বিষয় এতে করে আপনাদের পরিবেশ ভালো থাকবে।
এছাড়াও শরীরের পক্ষে নিম পাতার রস সহ মিম এর সবকিছুই অনেক বেশি উপকারিতা নিয়ে আসে।
[ads1]