৬টি নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন

আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের আজকের আলোচনা টপিক হচ্ছে নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন কি? কিভাবে এটির সমাধান পেতে পারেন সে সমস্ত বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে।

হয়তো লক্ষ্য করেছেন জন্মের পরপরই নবজাতকের বেশ কিছু অসুখ প্রতিনিয়ত দেখা দেয়।

ছোট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে কিছু অসুখে তারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

এ ধরনের অনেক অসুখ অল্প যত্নে ভালো হয়ে যায়। তবে যত্নটা সুন্দর এবং সঠিকভাবে করতে হবে।

সঠিকভাবে যত্ন করতে পারলেই এ ধরনের অসুখ থেকে নবজাতককে সহজেই মুক্তি দেওয়া সম্ভব।

নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন অনেকগুলো হতে পারে। নিচে উল্লেখিত বেশ কিছু নবজাতকের সমস্যার কারণসমূহ তুলে ধরা হয়েছে।

নবজাতক সুস্থ থাকলে ‘মা’ এমনিতেই মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন।

জন্ডিসে আক্রান্ত নবজাতক

জন্ডিস এটা খুব সাধারন ও স্বাভাবিক একটা রোগ নবজাতকের জন্য।

সাধারণত নবজাতক জন্মের ২-৬ দিনের মধ্যে এই রোগ দেখা দিতে পারে। আবার ২ সপ্তাহের মধ্যে তা সেরেও যায়।

এ সময় করণীয়: নবজাতক জন্ডিসে আক্রান্ত হলে এই সময় নবজাতককে মায়ের দুধ পর্যাপ্ত খাওয়াতে হয়।

সেইসঙ্গে সকালে হালকা রোদে নবজাতককে কিছু সময় রাখতে হয়।

তবে মনে রাখবেন, শিশুর মাথায় যেন সূর্যের আলো সরাসরি না পড়তে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুর জন্ডিসের আলাদা কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।

তবে হ্যাঁ, শিশু জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যদি জন্ডিসের কারণগুলো নবজাতকের মধ্যে লক্ষ্য করেন অথবা সাত দিন বয়সের পর জন্ডিস দেখা দেয়।

বা জন্ডিসের কারণে গায়ের হলদেতে ভাব যদি দিন দিন গারো হতে থাকে তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।

নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন গুলোর মধ্যে এটাও হতে পারে।

তাই দীর্ঘদিন যাবত জন্ডিসের আক্রান্ত থাকলে অবহেলা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে এ রোগগুলো অনেকটাই হালকা যত্নে সেরে ওঠে।

নবজাতকের চোখ দিয়ে পানি পড়া

অনেক সময় নবজাতকের চোখ দিয়ে পানি অথবা অশ্রু ঝরে পড়তে পারে। এজন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। এ রোগ গুলো হালকা যত্নে সেরে ওঠা সম্ভব।

শিশুর নাকের গোড়ায় চোখের কোনা বরাবর আঙ্গুল দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ বা মালিশ করলে চোখ দিয়ে পানি পড়া সেরে ওঠে।

মূলত এ কারণে ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না, তবে যারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত না তারা চাইলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য করবেন চোখের পানি যদি পুঁজ মেশানো হয় অথবা পুঁজের মতো হয়ে থাকে তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

এবার তো অবস্থায় আপনাকে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতেই হবে। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নবজাতকের স্তন ফুলে যাওয়া

খেয়াল করলে অনেক সময় দেখা যায় জন্মের পর অনেক শিশুর স্তন ফুলে যায়। আবার অনেক মেয়ে সন্তানের যৌনি পথ দিয়ে রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হতে পারে।

মূলত এটি স্বাভাবিক এর জন্য ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না অথবা চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় না। এজন্য শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই জরুরী।

আগেই বলেছি যে কোন রোগের জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার আগে নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নবজাতকের যত্ন নেওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন এটাও হতে পারে তাই সন্তানকে অবহেলা না করে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ময়লা থেকে দূরে রাখুন।

নবজাতকের ফুসকুড়ি সমস্যা

দেখবেন হয়তো, অনেক শিশুকে জন্মের পর গরম কাপড় বা বাড়ি তোয়ালে ইত্যাদি দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হয়।

অতিরিক্ত কাপড় পরানোর ফলে গরম শিশুর গায়ে লাল দানা বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

এরকম হলে শিশুকে ঘন ঘন কুসুম গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। এবার তো অবস্থায় মায়ের সেবা খুবই জরুরী শিশুর জন্য।

তাৎক্ষণিকভাবে বারবার শিশুর শরীরে বেবি পাউডার সেবন করতে হবে।

শিশুকে অতিরিক্ত ভারী কাপড় পরিধান থেকে দূরে রাখতে হবে এবং হালকা পাতলা আরামদায়ক কাপড় পরিধান করাতে হবে।

শিশু যাতে আরাম এবং শান্তি ফিল করে এমন কাপড় পরাতে হবে।

খুব ভারী এবং অনেক বেশি গরম এমন কাপড় গুলো পড়াবেন না এতে করে শিশুর শরীর কষা হয়ে যেতে পারে।

নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন এটিও হতে পারে।

উল্লেখিত ফুসকুড়ি এই কারণটি শিশুর জন্মের পর পর দেখা দিতে পারে তাই ভয়ের কিছু নেই এখানে।

এবং চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয় না। সাধারণ যত্নেই সেরে ওঠে এই রোগ।

নবজাতকের নাবি স্ফীতি

অনেক সময় কিছু কিছু শিশুর/ নবজাতকের নাভি শুকিয়ে যাওয়ার পর নাবি মুখের নিচের মাংসপেশীতে ফাঁকের সৃষ্টি হয়।

এবার তো অবস্থায় শিশু/ নবজাতক কাঁদলে নারীর ওখান থেকে বেলুনের মতো ফুলে ওঠে।

প্রথম কয়েক মাস নাভির ওখান থেকে ফোলানো বৃদ্ধি পেতে পারে তবে পরে ফোলানো সংকুচিত হতে হতে স্বাভাবিক হয়ে যায়। মনে রাখবেন নাবি স্ফীতি কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না।

তবে হ্যাঁ, নাবি স্ফীতি খুব অস্বাভাবিক মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত অথবা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তাৎক্ষণিকভাবে। যদিও এটি সব শিশুর হয়ে থাকে না।

নাবি স্ফীতি কোন জটিল রোগ নয় এটি আস্তে আস্তে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায় তবে যদি কারো মধ্যে ভয় ভিত্তিক কাজ করে তখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

নবজাতকের যৌনিপথে রক্তক্ষরণ

অনেক সময় নবজাতক মেয়েদের যৌনি কত রক্তক্ষরণ দেখা দিতে পারে।

এটি সাধারণত ৪-১০ দিনের মধ্যে মাথায় রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং তা মেয়েদের হরমোনের প্রভাবে হয়।

তবে রক্তক্ষরণের অন্যান্য কারণ যদি না থাকে তবে এটি নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে এজন্য দুশ্চিন্তা অথবা চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় না।

এ ধরনের রক্তপাতের সাধারণত ভয়ের কিছু নেই।

নবজাতকের শরীর মোচড়ানোর কারন গুলোর মধ্যে হতে পারে এটিও যৌনি পথে রক্তক্ষরণ।

তবে এজন্য ভয় না পেয়ে ভালোভাবে নবজাতকের যত্ন নিন নিচ থেকেই সেরে উঠবে এই রোগ।

তবে এ ব্যাপারে যদি আপনি অবগত না হন তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন অথবা ডাক্তারের নিকট এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment

//thairoob.com/4/6176583