পেটের মেদ কমানোর উপায়

পেটের মেদ কমানোর উপায় ! প্রচলিত এই বাক্যটির সাথে বাঙালি কমবেশি পরিচিত। ওজন কমাতে গিয়ে প্রত্যেকেই সমস্যায় পড়েন পেটের চারপাশের চর্বি কমাতে।

এর কারণটাও স্পষ্ট, ভুড়ি কমানো অতো সহজ নয়, যতোটা আমরা মুখে বলে ফেলি। তবে, অসম্ভবও নয়। ভুড়ি কমাতে কয়েকটি নিয়ম মানলে আপনিও হতে পারেন ছিপছিপে কোমরের অধিকারি।

পেটের মেদ একটি বিব্রতকর বিষয়। উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার যে পেটের মেদ বাড়ায় তা নয়, বেশি ক্যালরিযুক্ত যেকোনো খাবারই পেটের মেদ বাড়াতে পারে।

একবার পেটে মেদ জমলে সেটা কাটিয়ে ওঠা যাবে না, এ ধারণা ভুল। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্থ হলে সহজে মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

তার আগে জানা জরুরি কোন ধরনের খাবারের কারণে পেটে মেদ জমতে থাকে।

সাধারণত মদ্যপান, মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, অস্বাস্থ্যকর বাইরের খাবার, নিয়মিত লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া, স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ ইত্যাদি পেটের মেদ বাড়িয়ে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখে।

►► রোজার মাসের ডায়েট চার্ট 
►► রমজানে ও গরমে ত্বকের যত্ন

মনকে শান্ত রাখুন

মন শান্ত না থাকলে, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকলে শরীরের মেটাবলিজম হার কমে যায়। ঘুম ঠিক করে হয়না।

এমনকি খাবারও হজম হতে দেরি হয়। তাই যতোটা সম্ভব মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে খাওয়ার সময় এবং ঘুমের আগে।

গরম পানিতে লেবু

সকালে এক কাপ ঘন কফি বা চা মন মেজাজ ভালো করে দেয় ঠিকই।

কিন্তু যদি ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে লেবুর রস পান করুন।

লেবু ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সাহায্য করে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে।

এছাড়াও এটা দ্রুত চর্বি কমাতে সহায়তা করে। গরম পানিতে লেবু খাওয়া বেশি কষ্টকর মনে হলে এতে এক চামচ মধু যোগ করতে পারেন।

প্রতিদিন জিরা পানি পান

সকালে পানীয় হিসেবে জিরা পানি পান করুন। এটা হজমে সহায়তা করে, পেট ফোলাভাব কমায় ও পেটের মেদ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ নাস্তা

শরীরে শক্তি যোগাতে প্রোটিন ভূমিকা রাখে। নাস্তায় প্রোটিন খাওয়া পেশি গঠনের পাশাপাশি সারাদিন পেট ভরা অনুভূত হতে সহায়তা করে।

ফলে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকি কমে। প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও দেহে চর্বি সঞ্চয়কারী ইন্সুলিনের মাত্রা কমায়।

►► চুল গজানোর উপায়
►► আপেল সিডার ভিনেগার

ব্যায়াম করার সময় পেট টানটান

অনেকে রোজ মন দিয়ে এক্সারসাইজ করেন। কিন্তু কিছুতেই পেটের মেদ ঝরে না।

তার কারণ যে কোনও ব্যায়াম করার সময়ে পেটের পেশিগুলো টানটান রেখে ভিতরের দিকে টেনে ব্যায়াম করতে হবে। না হলে পেটের উপর চাপ পড়বে না।

পেটের ব্যায়াম করুন

পেটের মেদ কমাতে শুধু কার্ডিয়ো করলে হবে না, পেটের ব্যায়াম করতে হবে। প্ল্যাঙ্ক বা ক্রাঞ্চেস করা প্রয়োজন।

শুধু স্পট রিডাকশনে কোনও লাভ হয় না, তা এখন প্রমাণিত। তবে পেটের মাংসপেশিগুলো ট্রেন করে টানটান করার জন্য পেটের ব্যায়ামের বিকল্প নেই।

যোগব্যায়াম

যোগব্যায়ামেও পেটের মেদ কমানো সম্ভব। ধনুরাসন, ভুজাঙ্গাসন, উস্ত্রাসনের মতো বেশ কিছু আসন আপনাকে পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে।

ঘুম নিয়ন্ত্রণ করুন

স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। কিন্তু দিনে না ঘুমানোই ভালো। এতে শরীরে মেদ জমে।

ঘুম ছাড়া বিছানায় শুয়ে থাকবেন না। ক্লান্ত লাগলে ২০ মিনিটের বিউটি স্লিপ নিতে পারেন।

চিনিকে না বলুন

যদি সত্যিই আপনার পেটের চর্বি থেকে মুক্তি পেতে চান তবে চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা শুরু করুন।

চিনি শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা শরীরকে ফ্যাট সংরক্ষণে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ পেটে জমতে থাকে মেদ।

►► এলাচের অবিশ্বাস্য উপকারিতা
►► নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

এবার জেনে নিন পেট ও উরুর মেদ কমানোর ২টি সহজ ব্যায়াম-

  • পা দুটো সোজা করে রেখে শুয়ে পড়ুন। দুই হাত নিতম্বের নিচে থাকবে।
  • হাত দুটো নিচে রেখে পা দুটো এবার আরও ওপরে তুলতে হবে।
  • ওপরে ওঠানোর সময় নিশ্বাস ছাড়তে হবে এবং নিচে নামানোর সময় নিশ্বাস নিতে হবে। এভাবে ১৫ থেকে ২০ বার করতে হবে।
  • দুই পায়ের মাঝে বেশ খানিকটা দূরত্ব রেখে মাটিতে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার হাফ সিটিং পজিশনে বসুন।
  • আপনার মেরুদণ্ড ও শরীরের উপরের ভাগ যেন সোজা থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এই পজিশনটি ২ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
  • এরপর আবার সোজা হয়ে দাঁড়ান। এ প্রক্রিয়াটি পুনরায় করুন অন্তত ৩০ বার।
  • প্রতিদিন একই অনুশীলন না করে পরিবর্তন আনতে পারেন। ব্যায়ামের পরিবর্তন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিছু কথা

পেটের মেদ কমানোর উপায় সমূহ সম্পর্কে এতক্ষণ আলোচনা করা হয়েছে।

কিভাবে পেটের মেদ কমানো যায় সে বিষয়গুলো উপরে খুব সুন্দর ভাবে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি এটি আপনার খুবই কার্যকরী একটি টপিক হবে।

যারা পেটের মেদ কমাতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি অনেক বেশি উপকারী হবে।

মনে রাখবেন আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং খুবই প্রয়োজনীয় তাই আমাদের আলোচনা গুলো মেনে আপনি সামনের দিকে এগিয়ে যান।

ব্যায়াম করা, ঘুম নিয়ন্ত্রণ করা, চিনি না খাওয়া, প্রোটিন সমৃদ্ধ নাস্তা খাওয়া, জিরা পানি পান করা, গরম পানি আর লেবু খাওয়া, এড়িয়ে গুলো আপনি মেনে চলুন দেখবেন অল্প কয়েক দিনের মধ্যে আপনার পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে।

অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।  আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment