জেনে নিন মোবাইল ফোনের সেরা ১০ প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। আসুন এ বিষয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষের কৌতুহল ও জানার তীব্র আগ্রহ তাকে অন্য সব প্রাণী থেকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে।
পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নেওয়ার অদম্য আগ্রহ ও হার না মানা মনোভাব মানুষকে এনে দিয়েছে প্রযুক্তির অবিশ্বাস্য সব উৎকর্ষতা।
বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার সবচে’ বড়ো আশীর্বাদ হয়ে পৃথিবীকে মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে যে বস্তুটি, তা হলো আমাদের সকলের পরিচিত তারবিহীন ক্ষুদ্র যন্ত্র-মোবাইল ফোন।
সময়ের সবচে’ আলোচিত ও জনপ্রিয় প্রযুক্তি মনে করা হয় মোবাইল ফোনকে।
সেই উনিশ শতকে পথচলা শুরু করে নানা বিবর্তন ও ফিচার সমৃদ্ধ হয়ে আজকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্টফোন এখন সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে সর্ব শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে জীবনের অন্যতম অবিচ্ছেদ্য এক অংশ হিসেবে।
মোবাইল ফোনের অত্যধিক জনপ্রিয়তার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
চলুন, জেনে নেয়া যাক মোবাইল ফোনের জনপ্রিয়তার সবচে’ সেরা দশটি কারণ সম্পর্কে।
মোবাইল ফোনের সেরা ১০ প্রয়োজনীয়তা
১/ যোগাযোগ মাধ্যম
মোবাইল ফোনের সবচেয় বেশি প্রয়োজনীয় দিক নিয়ে বলতে গেলে সর্বাগ্রে আসে যোগাযোগ সুবিধার কথা।
দূরদেশে অবস্থানরত প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগের জন্য এখন আর চিঠি লিখে মাাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় না।
মোবাইল ফোন পৃথিবী গোলক হওয়ার বিজ্ঞানীয় ধারাকে মানুষের সামনে সত্যিকার করে উপস্হাপন করেছে।
এর কল্যাণে মূহুর্তেই জানা যাচ্ছে সুদূর প্রবাসে থাকা আত্নীয়-স্বজনের সার্বক্ষণিক খবর।
২/ ইন্টারনেট সেবা
যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। স্বল্পমূল্য ও সুলভ হওয়ায় পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ঘটে যাওয়া যে কোন সংবাদ মূহুর্তেই পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর কাছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সমাজিক যে কোন উদ্যোগ বা পরিস্থিতি সম্পর্কে মুক্ত আলোচনার সুযোগ হচ্ছে ঘরে বসেই।
হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, টেলিগ্রাম ইত্যাদি এপসের কল্যাণে মূহুর্তেই সেরে ফেলা যাচ্ছে অফিসিয়াল যে কোন কার্যক্রম।
অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিমিং, যে কোন ফাইল মূহুর্তেই ডাউনলোড করে ফেলাসহ নানা প্রয়োজনে ইন্টারনেট সংযুক্ত মোবাইল এখন মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সঙ্গী হয়ে উঠেছে।
৩/ তথ্য আদান-প্রদান
ব্লুটুথ ও এ জাতীয় শেয়ারিং ফিচারসমূহের কল্যাণে দ্রুততম সময়ে এক মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
এছাড়াও এসএমএস, এমএমএস বা ইমেইলের মাধ্যমেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় পরষ্পরের মধ্যে শেয়ার করা যায়।
বর্তমানে না লিখে শুধু মুখে বলার মাধ্যমে বার্তা আদান-প্রদান করাও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
৪/ বিনোদন
কর্মময় ব্যস্ততার ফাঁকে মোবাইল ফোনের একটি বিনোদনমূলক ভিডিও, মুভি বা গান আপনার হৃদয়ে এনে দিতে পারে অনাবিল সজীবতা।
একঘেয়েমি দূর করার সবচেয় কার্যকর উপাদান হিসেবে বিভিন্ন ফানি ভিডিও বা পছন্দের কোন একটি গান শোনাকেই বেছে নেয় মানুষ।
প্রিয় শিল্পীর বেস্ট কিছু গান সম্বলিত একটি প্লেলিস্ট দূর করে দিতে পারে সারাদিনের ক্লান্তি ও বিষাদ।
৫/ ব্যাংকিং সুবিধা
বর্তমানে প্রায় সবগুলো ব্যাংকই নিয়ে এসেছে স্মার্ট এপস সুবিধা। ঘরে বসেই মোবাইলে থাকা এপসের মাধ্যমে পরিচালনা করা যায় ব্যাক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট।
বিকাশ, নগদ বা ডাচ্-বাংলার মতো মোবাইল ব্যাংকিং এপসগুলোর সাহায্যে মূহুর্তেই টাকা আদান-প্রদান করা যায়।
এছাড়াও বর্তমানে মোবাইলেই ইন্টারন্যাশনাল কারেন্সি রিপ্লেস করে দেশীয় ব্যাংকে উত্তোলন করা যায়।
আরো পড়ুন: গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করার ১২ টি জনপ্রিয় উপায়
আরো পড়ুন: নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য শিক্ষণীয় গল্প!
৬/ সামাজিক উন্নয়ন
ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ ফিচারের মাধ্যমে সামাজিক যে কোন উদ্যোগ, অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা,
নিরক্ষরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদির সংবাদ জানানোর মাধ্যম হিসেবে সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখছে মোবাইল।
৭/ কর্মসংস্থান সৃষ্টি
বর্তমানে স্মার্টফোনের ব্যাপক চাহিদার ফলে মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
মোবাইল রিপেয়ার বা এর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতার মাধ্যমে অনেকেই করে নিচ্ছেন স্বচ্ছলতা অর্জনের সুযোগ।
এছাড়াও মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইটে সংযুক্ত থেকে চাকরি সংক্রান্ত নিউজ সহজেই সংগ্রহ করা যায়।
৮/ হিসাব-নিকাশ
কম্পিউটারের মতোই মোবাইলেও সাধারণ সব ধরনের হিসাব-নিকাশ করা যায়।
স্মার্টফোনের কল্যাণে ক্যালকুলেটর এপসগুলোতেও দিনদিন যুক্ত হচ্ছে অসাধারণ সব প্রয়োজনীয় ফিচার।
ছোট থেকে বড় যে কোন ধরনের হিসাব এখন অল্প সময়েই মোবাইলে সেরে ফেলা যায়।
৯/ ভিডিও ও ক্যামেরা
মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া যে কোন মূহুর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি তুলে রেখে দেয়া যায়।
সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না সবখানে।
মোবাইলে নিত্যনতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে হাই রেজুলেশনের ভিডিও বা ছবি তোলার বিভিন্ন ফিচার নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু করেছে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
এই দিক থেকে সব থেকে এগিয়া আছে Iphone 12
১০/ ফ্ল্যাশলাইট
অন্ধকারে চলাফেরায় বা রাতের বেলা আকস্মিক লোডশেডিংয়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করা যায় অনায়াসেই।
ভারি হ্যান্ডলাইট বহনের অসুবিধা দূর করে দিয়েছে স্মার্টফোনে থাকা ফ্ল্যাশলাইট সুবিধা।
এছাড়াও কম আলোতে বা অন্ধকার স্থানে ছবি তুলতে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
আরো পড়ুন: জন্মভূমি – জায়েদ ইরফান
আরো পড়ুন: চেক সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর
শেষ কথা
আধুনিক প্রযুক্তির সেরা দান মোবাইল ফোন। নানাবিধ সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি অন্য যে কোন প্রযুক্তি পণ্যের মতোই এরও রয়েছে অনেক ক্ষতিকর দিক।
সঠিক পদ্ধতিতে ও পরিমিত ব্যবহারের মাধ্যমে এর পূর্ণ সুফল উপভোগ করা সম্ভব। অপব্যবহার বা অপরাধমূলক কার্যক্রমে এর ব্যবহারের প্রতি সকলের সচেতন হতে হবে।
মানবসৃষ্ট প্রযুক্তিপণ্য যেন মানবসমাজের জন্যই আত্মঘাতী হয়ে না উঠতে পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে প্রত্যেকের।
তথ্যসূত্র: Priyomobile.xyz , google.com
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।