ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো? এধরনের একটা প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনে অবহমান রয়েছে। আমরা যারা মোটামুটি অনলাইন এর সাথে জড়িত রয়েছে তারা অনেক সময় বিভিন্ন বিষয়ের উপর চিন্তা ধারা করে থাকি তার মধ্যে প্রাথমিক একটি চিন্তা ধারা হচ্ছে ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো? হ্যাঁ ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার বেশকিছু প্রসেসড রয়েছে। তার মধ্যে একটি পপুলার প্রসেস হচ্ছে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা।
আমাদের আজকের আর্টিকেলে ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন সে সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। আপনি যদি ওয়েবসাইট কিংবা গুগল এডসেন্স সম্পর্কে নতুন হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এখানে কেবলমাত্র বেসিক বেশ কিছু সিস্টেম তুলে ধরা হয়েছে যেগুলো আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি।
►► আরো দেখো: ৫ টি ইউটিউবে সফল হওয়ার টিপস
►► আরো দেখো: পপুলার কয়েকটি অল্টারনেটিভ পেইড সফটওয়্যার এর ব্যবহার
এই আর্টিকেলের যে বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে!
- কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে?
- কোন প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
- ডোমেইন কী, এটা কিভাবে কাজ করে?
- হোস্টিং কি, এবং এটি কিভাবে কাজ করে?
- এসইও (SEO) কি এবং কেন প্রয়োজন?
- গুগল এডসেন্স কি?
- গুগল এডসেন্স থেকে কিভাবে ইনকাম করে?
- থেকে ইনকাম করার জন্য ওয়েবসাইটে কি কি প্রয়োজন?
- কত টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব ওয়েবসাইট থেকে?
কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে?
ওয়েবসাইট বলতে আমরা যেগুলো বুঝে থাকি তা হচ্ছে একটা দোকান যেখানে আপনার প্রোডাক্ট বা বিভিন্ন জিনিসপত্র সাজানো-গোছানো থাকবে যেগুলো মানুষ সহজে পড়তে পারবে অথবা মানুষের প্রয়োজনীয় মত সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে। যেমন আমরা একটা দোকান কে সুন্দর মত সাজিয়ে গুছিয়ে রাখে তেমনি ভাবে একটি ওয়েবসাইটকে আমরা সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পারি।
ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করব এমন একটা প্রশ্নের প্রথম উত্তর হচ্ছে ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করার পূর্বে আপনাকে সুন্দর মত একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। উৎস থেকে ইনকাম করার পূর্বে সবচাইতে প্রথম কাজ হচ্ছে একটা ওয়েবসাইট সুন্দর মত তৈরী করতে হবে এবং রেস্পন্সিভ একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তবে হ্যাঁ একটা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনাকে অ্যাডভান্স লেভেলের কিছু জানতে হবে কেননা বর্তমান সময়ে এত বেশি কম্পিটিশন চারদিকে যার মধ্যে বেসিক বিষয়গুলো দিয়ে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করলে সেটা এত বেশী রেস্পন্সিবল হয়ে ওঠে না।
আবার কিছু কিছু সময় এগুলো রেস্পন্সিভ করার জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় এবং সেখানে ডেভলপার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এডভান্স লেভেলের যারা ডেভলপার রয়েছেন তাদের মাধ্যমে আপনি আপনার মনের মত করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট কি? এ ধরনের প্রশ্নে আমরা বুঝতে পারলাম ওয়েবসাইট হচ্ছে একটি দোকানের মত যেটা আপনাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে হবে। এটা হতে পারে কোন নিউজ ওয়েবসাইট (News Website) কিংবা ই-কমার্স (e-commerce) অথবা ব্লগিং করার জন্য যে প্রকার ওয়েবসাইট হোক না কেন সেটা কে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে যেকোনো ইউজার এটা দেখে অ্যাট্রাক্টিভ হয় এবং এটার প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয়।
কোন প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
বেসিক্যালি ওয়েবসাইট কি সে বিষয়ে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। তবে ওয়েবসাইট কোন প্লাটফর্মে তৈরি করবেন সেটা কেবলমাত্র আপনার বাজেট কিংবা আপনার অভিজ্ঞতার উপর ডিপেন্ড করে আবার কিছু কিছু সময় আপনি কি বিষয়ের উপর লেখালেখি করতে চান অথবা কি বিষয়ের উপর ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান সেটার উপরে অধিকাংশ সময় ডিফেন্ড করে থাকে।
যদি আপনার ওয়েবসাইট হয়ে থাকে ই-কমার্স রিলেটেড সে ক্ষেত্রে আপনি লারাভেল (Laravel) কিংবা ওয়ার্ডপ্রেসের সহযোগিতা নিতে পারেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানে সবগুলো প্ল্যাটফর্মের থেকে ওয়ার্ডপ্রেস এগিয়ে আছে। অধিকাংশ সময় আমরা দেখে থাকি যে, বেশিরভাগ মানুষ তার ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট (Portfolio Website) কিংবা বিজনেস ওয়েবসাইট (Business Website) গুলো ওয়ার্ডপ্রেসে করে থাকেন কেননা ওয়ার্ডপ্রেস কন্ট্রোল প্যানেল (WordPress Control Panel) আমাদের জন্য অনেকটা ইজি হয়ে।
তবে যারা একদম বেসিক লেভেল এর রয়েছে তাদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর ডিপেন্ড করে ‘ব্লগার প্ল্যাটফর্ম’ (Blogger Platform) রিকোয়ারমেন্ট হতে পারে। কেননা ওয়েবসাইট তৈরীর ক্ষেত্রে ব্লগার বেশিকদের জন্য অনেকটা ভালো বলা যেতে পারে এবং এখানে ইনভেস্ট করে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে হচ্ছে না এটা একটা প্লাস পয়েন্ট নতুনদের জন্য।
নতুন অবস্থায় ৫,০০০/- ইনভেস্ট (Invest) করে ওয়েবসাইট তৈরি করা অনেকের কাছে ডিফিকাল ব্যাপার হয়ে পড়ে। তাই এ বিষয়টাকে অনেকেই ইগনোর করে তাদের জন্য ব্লগার পারফেক্ট প্ল্যাটফর্ম। আর যারা অ্যাডভান্স লেভেলের (Advance Level) যাদের পপুলারিটি অনেক বেশি তারা বিভিন্ন অ্যাডভান্স প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
►► আরো দেখো: ৫ টি ইউটিউবে সফল হওয়ার টিপস
►► আরো দেখো: লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম কি?
ওয়েবসাইট তৈরীর পপুলার কিছু প্ল্যাটফর্ম
- WordPress.org
- Web.com
- Wix
- HubSpot Website Builder
- WooCommerce
- Gator by HostGator
- Zyro
- Domain.com
- BigCommerce
- Shopify
- WordPress.com
- Squarespace
- Weebly
- Dreamhost Website Builder
- GoDaddy Website Builder
ডোমেইন কী? এটা কিভাবে কাজ করে?
প্রত্যেক ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট আইপি অ্যাড্রেস (IP Address) থাকে। যেমনঃ 66.220.159.255. সাধারণত আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট মনে রাখা কষ্টসাধ্য। তাই মনে রাখার সুবিধার জন্য আইপি অ্যাড্রেসের পরিবর্তে ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এক বা একাধিক কম্পিউটার কে ইন্টারনেট এ চেনার জন্যও ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়।
চলুন, আমরা ডোমেইন নাম এর কিছু ব্যবহার দেখে নেইঃ- https://www.google.com/ – https://www.youtube.com/ – https://www.facebook.com/ – এখানে গুগল, ইউটিউব ও ফেসবুক কে আমরা সাধারণত আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট মনে রাখা কষ্টসাধ্য হওয়ার কারনে ডোমেইন নাম দিয়ে সহজেই খুঁজে পাই।
হিউজ পরিমান ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন রয়েছে যার মধ্যে উল্লেখিত কয়েকটি ডোমেইন এক্সটেনশন (Domain Extension) নিচে দেয়া হল-
- .com
- .xyz
- .ru
- .org
- .net
- .ir
- .in
- .uk
- .au
- .de
- .ua
যে ডোমেইন গুলো ২০২১ সালে বেশি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে
- .tk 27.5 million
- .cn 24.7 million
- .de 16.6 million
- .uk 10.8 million
- .nl 6.0 million
হোস্টিং কি? এর কাজ কি?
হোস্টিং হল এক ধরনের ওয়েব সার্ভার। যেখানে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা স্টোর করা হয়। কোনো ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট ডোমেন নেম ইন্টারনেটে সার্চ করলে, হোস্টিং এর মাধ্যমে ওই ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা গুলি দেখতে পারে। ডোমেইন এবং হোস্টিং এর কানেকশন এর মধ্য দিয়ে কোন ওয়েবসাইট, ইউজার এর সামনে ফুটে ওঠে।
একটি কম্পিউটার যখন নেটওয়ার্কের মধ্যে কানেক্ট হয় তখন তাকে হোস্ট বলা হয়। কখনো কখনো কম্পিউটার বা অন্য যে কোন ডিভাইস নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্ট হলে তাকেও হোস্ট বলা হয়ে থাকে। সেটি মোবাইল, ট্যাবলেট বা অন্য যে কোন ডিভাইস হতে পারে। হোস্ট বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন: নেটওয়ার্ক হোস্ট, ওয়েব হোস্ট ইত্যাদি।
উদাহরণ হিসেবে: যখন কোন ডোমেইনকে, হোস্টিং এর সাথে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কানেক্ট করা হয় তখন এটি ওয়েব হোস্ট এর মধ্যে পড়ে।
►► ডোমেইন-হোস্টিং ক্রয় করার জন্য Winghosty একটি ভালো কোম্পানি।
এসইও (SEO) কি এবং কেন প্রয়োজন?
এসইও অর্থ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, যা ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিকের পরিমাণ এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করবে। এভাবেও বলতে পারেন, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন হলো সার্চ ইঞ্জিন থেকে ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিকের গুণমান এবং পরিমাণ বাড়ানোর প্রক্রিয়া। এসইও একটি ওয়েবসাইটের সরাসরি ট্র্যাফিক বা পেইড ট্র্যাফিকের চেয়ে অর্গানিক ট্র্যাফিককে গুরুত্ব দেয়।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) হচ্ছে Google, Yahoo ও Bing সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে উচ্চতর পর্যায়ে অবস্থান পাওয়ার জন্য ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন করার একটি প্রক্রিয়া। বর্তমান সময়ে বেশীরভাগ ওয়েব ডেভেলপার ও অনলাইন মার্কেটার গুগল সার্চ রেজাল্টের অসাধারণ কিছু Algorithms এর জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে থাকে। তাছাড়া ভিজিটররা ওয়েব সার্চের ৮৫% কাজ Google সার্চ ইঞ্জিন হতে সেরে নেয় বিধায় সবাই Google সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কৌশল অবলম্বন করে।
এসইও (SEO) দুই ধরনের হয়ে থাকে!
► অন পেজ SEO
একটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানোর উদ্দেশ্যে অভ্যন্তরীণ যে সব কাজ করা হয় তাকে অন পেজ এসইও বলে।
অন পেজ এসইও কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- ১. টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)
- ২. পেজ অপটিমাইজেশন (Page Optimization)
অন পেজ এসইও এর জন্য যে কাজগুলো করতে হয় সেগুলো হলোঃ-
- Domain, Domain Name, Domain Address/URL
- Title, Keyword, Description
- NO-follow, DO-follow
- HTML Tag H1, H2 and H3
- Keyword Research
- Website Analysis
- Content Optimization etc.
► অফ পেজ SEO
যে কোনো ওয়েবসাইটের প্রচার এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে URL Share, Link Building এবং যে প্রচারনা করা হয় তাকে অফ পেজ এসইও বলে।
অফ পেজ এসইও–এর জন্য যে কাজগুলো করতে হয় সেগুলো হলঃ-
- Web 2.0
- Blog Commenting
- Forum Posting
- Article Submission
- Social Bookmarking
- Review Submission
- PDF Submission
- Video Submission
- Image Submission
- Directory Submission
- Guest Post
- Email Marketing
গুগল এডসেন্স কি?
গুগল এডসেন্স হলো গুগলের একটি অ্যাডভার্টাইজমেন্ট পাবলিশিং প্রোগ্রাম। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে এড দেখে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনারা ইউটিউবের ভিডিওতে বা ব্লগে বিভিন্ন রকমের অ্যাড দেখতে পান এই অ্যাডগুলো কিন্তু গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে দেওয়া হয়, ওই অ্যাড এ যদি ক্লিক পড়ে তাহলে কিন্তু ওদের একাউন্টে টাকা জমা হয় কিছু টাকা গুগোল কেটে নেয় কিছু টাকা যেখানে অ্যাড দেখায় তাদের কে দেয়। অর্থাৎ গুগল এডসেন্স হলো গুগলের একটি সার্ভিস।
এডসেন্স মূলত দুই প্রকার!
- হোস্টেড একাউন্ট। ‘Hosted Account’
- নন হোস্টেড একাউন্ট। ‘Non Hosted Account’
হোস্টেড একাউন্ট (hosted account)
ইউটিউবে যে এডসেন্স আপনি ব্যবহার করেন সেটা হলো হোস্টেড একাউন্ট। ইউটিউবে অ্যাড এর মাধ্যমে যে ইনকাম করে তার লভ্যাংশের কিছু অংশ ইউটিউব কেটে নেয় এটাই হচ্ছে হোস্টেড একাউন্ট।
নন হোস্টেড একাউন্ট (non hosted account)
ওয়েবসাইটে বা ব্লগে আপনি যে এডসেন্স ব্যবহার করেন সেটাই হচ্ছে নন হোস্টেড একাউন্ট। এই অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ নিজের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
গুগল এডসেন্স থেকে কিভাবে ইনকাম করে?
ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো? এই প্রশ্নের সর্বপ্রথম ইনকামের মাধ্যম হচ্ছে গুগল এডসেন্স। কেননা ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম এর জন্য গুগল এডসেন্স এর বিকল্প অন্য যে এড নেটওয়ার্ক গুলো রয়েছে সেগুলো এত বেশি জনপ্রিয় না এবং গুগল এডসেন্স এর মত আপনাকে নিয়মিত পেমেন্ট করবে না।
আমাদের এই আর্টিকেলের মেইন টাইটেল হচ্ছে ‘ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো?’ এই টাইটেল এর ভিত্তিতে এডসেন্স কি সেটা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আর অ্যাডসেন্স থেকে উপার্জন করতে হলে আপনার একটা ইউটিউব চ্যানেল কিংবা একটা ওয়েবসাইট থাকতেই হবে। ওয়েবসাইটের সাথে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করে ইনকাম করা যায় এটা আমরা হয়তো অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা।
এ কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলের যে রিকোয়ারমেন্ট (শর্ত) রয়েছে সেগুলো ফুল ফিলাপ করে আমরা এপ্লাই করলে ইউটিউব আমাদের চ্যানেলকে মনিটাইজেশন করে দেয় অর্থাৎ গুগল এডসেন্স একাউন্টের সাথে কানেক্টেড করে দেয়। এটা এরকম কাজ করে যে, আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এখন থেকে ইউটিউব এর অফিশিয়াল সিস্টেমের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে এবং সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে টাকাগুলো উপার্জন হবে সেগুলো আপনি গুগল এডসেন্স একাউন্টের মাধ্যমে উইথড্র (Withdrawal) করতে পারবেন।
মেইনলি গুগল অ্যাডসেন্স (Google Adsense) থেকে উপার্জন করার কোনো সিস্টেম নেই। তবে হ্যাঁ তো বর্তমানে এরকম সিস্টেম রয়েছে আপনার গুগল এডসেন্স যদি থাকে সেটা আপনি বিক্রি করে টাকা উপার্জন করতে পারেন কিন্তু এর বাইরেও গুগল এডসেন্স দিয়া টাকা উপার্জন করা যায় না টাকা উপার্জন করতে হবে ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এবং সেটা আপনাকে উইথড্র করতে হবে গুগল এডসেন্স একাউন্টের মাধ্যমে।
ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
আমরা উপরেই আলোচনা করেছি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে যে সকল সরঞ্জাম প্রয়োজন হয় তা হচ্ছে- ‘ডোমেইন-হোষ্টিং’ (Domain-Hosting) এবং একটা সুন্দর রেস্পন্সিভ ডিজাইন। তবে হ্যাঁ বর্তমান হিউজ পরিমান অনলাইনে ফ্রি প্ল্যাটফর্ম আছে আপনি যেখানে একটা সুন্দর রেসপন্সিবিলিটি ওয়েব সাইট তৈরি করে সেটাতে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ করাতে পারেন।
তবে হ্যাঁ, ফ্রী প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কোন ওয়েবসাইট তৈরি করলে সেগুলোর ব্যাকেন্ড কন্ট্রোল (Backend Control) আপনার হাতে থাকে না অর্থাৎ আপনি চাইলেই এখান থেকে মুখ করে অন্য কোন প্লাটফর্মে যেতে পারবেন না।
সব সময় আপনাদের উচিত যদি আপনার চিন্তা ধারা কিংবা আপনার কার্যক্রম লম্বা সময় হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার উচিত এবং আমরা রিকোয়ারমেন্ট (Recommend) করে থাকব যে আপনি প্রিমিয়াম কিছু ব্যবহার করুন যেগুলোর সম্পূর্ণ কন্ট্রোল সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস আপনার আওতায় থাকবে এবং আপনি চাইলে সে গুলোকে মুভ করে অন্য জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন।
আবার প্রত্যেকটা প্লাটফর্মে ফ্রি এবং পিনিয়াম ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে আপনি সেটিও দেখতে পারেন।
বিশেষত্ব:
ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করলে সেখানে আপনি প্রিমিয়াম এবং ফিরি সব কিছুই করতে পারবেন। একটা সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে আমি আগেই বলেছি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যে সকল সরঞ্জাম প্রয়োজন হয় সেগুলো কে নিতে হবে। ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল আর জন্য গুগলের যে রিকোয়ারমেন্ট রয়েছে সেগুলো ফিলাপ করতে হবে। গুগলের রিকোয়ারমেন্ট “ওয়েবসাইটে মিনিমাম ৩০-৪০ টি ইউনিক এবং আপনার লেখা আর্টিকেল থাকতে হবে, প্রত্যেকটা আর্টিকেল মিনিমাম ১,০০০ ওয়ার্ড লিখতে হবে।” মনে রাখবেন আপনার ওয়েবসাইটে পোর্ট একটা আর্টিকেল যেন ইউনিক হয় এবং এমনভাবে আর্টিকেল লিখবেন যেন সেগুলো থেকে মানুষের উপকার হয় মানুষ যেন সেগুলো পড়লে স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে পারে।
এর পরে আপনি গুগল এডসেন্স একাউন্ট ক্রিয়েট (Create) করে এপ্লাই করলে আপনার ওয়েবসাইটে গুগোল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রুভ (Adsense Approve) হয়ে যাবে। অ্যাপ্রুভ হওয়ার পরে আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্টগুলো এবং হোমপেজে বিভিন্ন জায়গায় গুগল তাদের বিজ্ঞাপন গুলো দেখিয়ে থাকবেন এবং সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে ইনকাম হতে থাকবে। এভাবে প্রতিনিয়ত আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ট্রাফিক ঢুকবে আপনার তত বেশি ইনকাম বাড়তে থাকবে। আমাদের সব সময় চেষ্টা থাকে যে আমাদের ওয়েবসাইটে কিভাবে অর্গানিক ট্রাফিক গুলো বেশি নেয়া যায় আর এগুলো নেয়ার সবচাইতে সুন্দর মাধ্যম হচ্ছে এসইও (SEO) করা। এসইও করে আপনার ওয়েবসাইটকে ভালো একটা পজিশনে নেওয়া সম্ভব।
শুধু এখানেই শেষ নয়, আপনার ওয়েবসাইটে যদি পর্যাপ্ত ট্রাফিক থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির থেকে স্পন্সর গ্রহণ করতে পারেন, এছাড়া আপনি বিভিন্ন কোম্পানির এড নেটওয়ার্ক গুলো ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে আপনি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে ইনকাম করতে পারেন।
সুতরাং, ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করবো এ ধরনের প্রশ্নের সঠিক উত্তর আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়?
উপরে আমরা যে সকল বিষয়গুলো আলোচনা করেছি তার মেইন বিষয় হচ্ছে! আমি ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারব? যদিও আমি পূর্বে বলেছি এটা সম্পূর্ণ ট্রাফিক ভিত্তিক সিস্টেম। আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ট্রাফিক ঢুকবে ততো বেশি ইনকাম হবে। অতঃপর, আপনার মেইন টার্গেট থাকতে হবে অর্গানিক ট্রাফিক কিভাবে বেশি বেশি অর্জন করতে পারেন কারণ অর্গানিক ট্রাফিকের উপর ভিত্তি করে আপনার ইনকাম। অর্গানিক ট্রাফিক যত বেশি হবে আপনার ইনকাম কত দিন দিন আপডেট হতে থাকবে। আপনার কত ইনকাম হয়েছে কত ইম্প্রেশন সবকিছু আপনি গুগল এডসেন্স থেকেই সুন্দরভাবে দেখতে পারবেন।
এগুলো গুগল অ্যাডসেন্স থেকে সহজেই দেখা যায় আর বিশেষ করে গুগল এনালাইটিক্স ব্যবহারের ফলে আপনি ওয়েব সাইটের সকল ডাটা দেখতে পারবেন। ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্রাফিক ট্রাফিক দিরেক্ট লগইন করেছে কিংবা ভিজিট করেছে এবং কোথায় থেকে ভিজিট করছে সবগুলো আপনি দেখতে পারবেন। আর আপনার ওয়েবসাইটে যদি প্রতিনিয়ত অর্গানিক ট্রাফিক বাড়তেই থাকে একটা সময় আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি স্পন্সর প্রধান করবে এবং সে স্পন্সর এর মাধ্যমেও আপনি ভালো একটা উপার্জন করতে পারবেন। তবে এখানে তেমন কোনো লিমিটেশন নেই কারণ আপনি এখানে এসেই আপনি ইনকাম করতে পারবেন না আপনাকে ভালো একটা পজিশনে যেতে হবে এর পরে আপনাকে ইনকাম করার রাস্তা বের করতে হবে।
সর্বশেষ:
উপরের মাধ্যমগুলো অবলম্বন করে আপনি উপার্জন করতে পারেন। একটা ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করার জন্য যে মাধ্যমগুলো প্রয়োজন কিংবা যে সকল বেসিক এবং অ্যাডভান্স মাধ্যমগুলো জানা প্রয়োজন সেগুলো আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের সামনে আলোচনা করেছি। উপরের মাধ্যমগুলো অবলম্বন করে আপনিও আপনার ওয়েবসাইটকে খুব ভালো একটা অবস্থানে পৌঁছে দিতে পারেন।
শুধু প্রতিনিয়ত আর্টিকেল লেখা আর সেগুলো প্রকাশ করলেই আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসবেনা। আমাদের আর্টিকেলগুলো আদম কোয়ালিটিফুল কিন এগুলো মানুষের প্রয়োজনে আসবে কিনা এবং এগুলো পড়তে মানুষ উৎসাহিত হবে কিনা সে বিষয়ে আমাদেরকে জানতে হবে মানুষ কি চায় সেটা আমাকে বুঝতে হবে সে বিষয়ের উপর আমাদের আর্টিকেল লিখতে হবে। উপরে যে সকল বিষয়গুলো আলোচনা করেছে তার মধ্যে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুলটি অতিদ্রুত আমাদেরকে ধরিয়ে দিবেন যাতে করে আমরা ভুলের করতে পারি। আর হ্যাঁ, আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লাগলো সে বিষয়ে জানিয়ে আপনি কমেন্ট করতে পারেন এবং আপনি চাইলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে পারেন।