ডায়াবেটিস কমানোর উপায় জানতে হলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে ডায়াবেটিস কি? ডায়াবেটিস মেলিটাসকে সংক্ষেপে আমরা বলি ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস হলো আমাদের শরীরের এক ধরনের মেটাবলিক রোগ। ডায়াবেটিস হলে আমাদের শরীরে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ প্রয়োজনীয় লেভেলের চেয়ে অতিরিক্ত বেড়ে যায়। হার্ট এটাক, স্ট্রোক এবং কিডনি ডেমেজ সহ অনেক সমস্যার জন্যই ডায়াবেটিস দায়ী।
তাহলে চলুন এবার ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:-
ডায়াবেটিস’র কমন কিছু লক্ষনসমূহ –
- অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা
- অতিরিক্ত পানির তৃষ্ণা লাগা
- ওজন কমে যাওয়া
- বার বার প্রস্রাব হওয়া
- চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে
- অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভব হতে পারে
আরো স্বাস্থ্য টিপস পড়ুন
- শরীর দুর্বল হলে করণীয় কি
- সহজেই চিকন হওয়ার উপায়
- আমি মোটা হব কিভাবে?
- কিভাবে লম্বা হওয়া যায়?
- ইফতারে যা খাওয়া উচিত
- প্রেসার লো হলে করণীয়
ডায়াবেটিস কত প্রকার?
ডায়াবেটিস সাধারনত দুই ধরনের হয় থাকে –
- টাইপ ১ ডায়াবেটিস
- টাইপ ২ ডায়াবেটিস
এছাড়া প্রি ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রেশনাল ডায়াবেটিস। প্রি ডায়াবেটিস হল সুগার লেভেল স্বাভাবিক লেভেলের চেয়ে একটু বেশি। প্রি-ডায়াবেটিস কে বলা যায় ডায়াবেটিস শুরু হওয়ার পর পূর্বের অবস্থা।গ্যাস্ট্রেশনাল ডায়াবেটিস হল গর্ভাবস্থায় হরমোন জনিত কারনে সৃষ্ট এক ধরনের ডায়াবেটিস। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চা প্রসবের পর এই ধরনের ডায়াবেটিস আর থাকে না।
তবে ডায়াবেটিস বলতে আমরা সাধারনত টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়বিটিসকে বুঝানো হয়। দুইটা টাইপ আলাদা হলেও দুইটাই খারাপ ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস কমানোর উপায় মানেই ডায়াবেটিস টাইপ ২ কে বুঝানো যায়। কারণ এটা নিয়ন্ত্র করা যায়।
ডায়াবেটিস হলে কি হয়
টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস দুইটাতেই রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। গ্লুকোজ আমাদের শরীরে শক্তির জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ এই গ্লুকোজই আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। আমরা প্রতদিন যেই খাবার খাই বা পান করি, এটা থেকে কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে গ্লুকোজ হয় , গ্লূকোজ রক্তে প্রবেশ করে। এই গ্লুকোজ ইনসুলিন নামক হরমোনের সাহায্যে রক্ত থেকে শরীরের বিভিন্ন কোষে প্রবেশ করে। শরীর তখন খাবার পেয়ে শক্তি পায়। ইনসুলিন তৈরি হয় প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয় থেকে।
শরীরে ডায়াবেটিসের কোন সমস্যা না থাকলে, গ্লুকোজ রক্তে প্রবেশ করার সাথে সাথে প্যানক্রিয়াস একটা সিগনাল পায় এবং প্যানক্রিয়াস সাথে সাথে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু করে। এই ইনসুলিনের সাহায্যে গ্লুকোজ রক্ত থেকে শরীরের কোষে প্রবেশ করে। শরীরের কোষগুলো খাদ্য পায়। এইভাবে আমাদের শরীরে গ্লুকোজ এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য লেভেলের কারনে আমরা বেঁচে আছি।
এখন কারো শরীরে যদি ডায়বেটিস থাকে তখন এই গ্লুকোজ আর ইনসুলিনের এই ভারসাম্য লেভেল বজায় থাকে না। অনেক সময় পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন হয় না বা উৎপাদিত ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করে না কিংবা কোন ইনসুলিন উৎপাদনই হয় না ফলে এই ইনসুলিনের অভাবে গ্লুকোজ রক্ত থেকে শরীরের প্রবেশ করতে পারে না। শরীরের টিস্যূগুলো খাদ্য পায় না।
টাইপ ১ এবং টাইপ ২ এর মধ্যে পার্থক্য
শরীরে যখন কোন ইনসুলিনই উৎপাদন হচ্ছে না, সেটাই টাইপ ১ ডায়াবেটিস। শতকরা প্রায় দশ জনের ডায়াবেটিস হল টাইপ ১ ডায়াবেটিস। এদের ক্ষেত্রে বাহির থেকে ইনসুলিন দিতে হয়।
শরীরে যখন পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন হচ্ছে না কিংবা হলেও সঠিকভাবে কাজ করতেছে না সেটা টাইপ ২ ডায়াবেটিস। এই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস অতিরিক্ত না হলে নিয়মিত ব্যায়াম এবং খাবার নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন সম্ভব হয়।
তবে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ দুই ধরনের ডায়াবেটিসের জন্যই গ্লুকোজ রক্ত থেকে শরীরের কোষে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে ডায়াবেটিস হওয়া মানে রক্তে গ্লুকোজ বা সুগার অধিক পরিমানে জমতে থাকা।
আরো স্বাস্থ্য টিপস পড়ুন
- ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়
- শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী?
- পেটের মেদ কমানোর উপায়
- হাই প্রেসার কমানোর উপায়
- কোন খাবারে কত ক্যালরি
- মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়
কিভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস আছে?
ডায়াবেটিস হলে অতিরিক্ত প্রস্রাব হবে, অনেক বেশি পানির পিপাসা লাগবে, শরীরে খুব বেশি ক্লান্তি লাগবে, ইনফেকশন জনিত ক্ষত বা কাঁটাছিঁড়া সহজে ভাল হবে না। এছাড়া খুব সহজেই আপনার নিকটবর্তী চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রক্তে সুগারের পরীক্ষা করলেই বুঝতে পারবেন আপনার ডায়বিটিস আছে কিনা।
সকালে খালি পেটে ডায়বিটিস মাপলে যদি ৫.৬ (মিলি মোল প্রতি লিটারে) এর নিচে হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার ডায়াবেটিস নেই, আর যদি ৫.৬ – ৬.৯ হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার প্রি ডায়াবেটিস আছে। আর খালি পেটে সুগার যদি ৭ এর উপরে হয় এবং দুইটা আলাদা টেস্টেই ৭ বা এর উপর পান, ধরে নিতে পারেন আপনার ডায়াবেটিস আছে।
ডায়াবেটিস যদি চিকিৎসা না করেন, তাহলে কি হবে –
রক্তে অনেক বেশি সুগার অনেক সময় ধরে থাকলে আমাদের হার্ট, কিডনি, চোখ এবং পা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ আমাদের মৃত্যু হতে পারে। ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি কিংবা কিভাবে ডায়বিটিস প্রতিরোধ করব চলুন জেনে নেই।
- নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে।
- মিষ্টি এবং শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে।
- পর্যাপ্ত পানি খাবেন।
- ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন।
- ধূমপান পরিহার করুন।
সর্বোপরি ডায়াবেটিস কমানোর উপায় বা ডায়াবেটিস কমাতে চাইলে অলসতা বা আলসেমি জীবন বাদ দিতে হবে। প্রচুর পরিমানে শারীরিক প্ররিশ্রম করতে হবে , যদি আমরা ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চাই।
‘গায়নূরা প্রোকাম্বেন্স’ নামে একটি ওষধি গাছ রয়েছে। এই গাছটি ডায়াবেটিস সারাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে এখানে ক্লিক করুণ।
- ডায়াবেটিস কমানোর ঔষধ
- ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে
- কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
- সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায়?
- গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
- দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
- ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়
- ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময়ের ঔষধ আবিস্কার
- হামদর্দ ডায়াবেটিস ঔষধ
- কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
- ডায়াবেটিস চিকিৎসা 2021 আপডেট